নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একটি রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলছেন, ‘হাইকোর্টের এ রায়ের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বৈবাহিক অবস্থা জানাতে বাধ্য করা যাবে না। আগে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটা জানতে চাইত, সেটাকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আদালত বলেছেন, এর পর থেকে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা জানতে চাওয়া যাবে না।’
কোন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ রায় প্রযোজ্যÑজানতে চাইলে অমিত দাশগুপ্ত বলেন, ‘যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইউনিভার্সিটি হোক, কলেজ হোক, কোনো বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোকÑসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে এই নিয়ম।’
ধর্ষণের ফলে সন্তানের জন্ম দেয়া এক মায়ের ভর্তি-জটিলতা নিয়ে ২০১৭ সালে একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে দুই আইনজীবী হাইকোর্টে এ রিট মামলা করেছিলেন। সেই ঘটনা তুলে ধরে অমিত দাশগুপ্ত বলেন, ‘নার্সিং কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে একজন রেপ ভিক্টিম ছিলেন। তার বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছে। তার একটা ছেলে ছিল। ফলে সে তো না বিবাহিত, না অবিবাহিত। আবার সে অবিবাহিত, কিন্তু তার তো একটা বাচ্চা আছে। সে কারণে তাকে ভর্তি নেয়া হচ্ছিল না। তাকে বলা হয়েছিল স্বামী পরিত্যক্তা কলাম ফিল আপ করার জন্য। তো তখন সে সেটা করেনি দেখে তাকে ভর্তি নেয়া হচ্ছিল না। পরে তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা রিট ফাইল করেন।’
সেই রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রুল জারি করেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে একটি নীতিমালা কেন করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। পাশাপাশি সেই তরুণীকে অবিলম্বে নার্সিং কলেজে ভর্তি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ছয় বছর আগে জারি করা সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল রায় দিলেন আদালত।