Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 12:52 am

শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখুক নবনিযুক্ত শিক্ষকরা

বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরদণ্ড। এ কথাটির গুরুত্ব যে অপরিসীম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আধুনিক বিশ্বে যেসব জাতি শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে সেসব দেশই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্ব আসরে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে। তাই শিক্ষায় উন্নতি লাভের বিকল্প নেই। আর শিক্ষার উন্নতি লাভের প্রধান কারিগর হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকেন শিক্ষকমণ্ডলী। কাজেই সেই শিক্ষকমণ্ডলী যাতে গুণগত শিক্ষা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে জাতি গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেন, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি বৈকি।

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘নিয়োগপত্র পেলেন ৩৬ হাজার শিক্ষক’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে বৈকি। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, একযোগে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষক বিভিন্ন বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হবেন। প্রকৃতপক্ষে এই এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রসারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তাতে শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। নবনিযুক্ত শিক্ষকরা যাতে গুণগত শিক্ষা প্রসারে ভূমিকা রাখতে পারেন, সে বিষয়ে মনোযোগ দেয়া আবশ্যক বলে মনে করি।

বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিশেষ করে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে নি¤œমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। আগামী ২০২৬ সালে দেশটির স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকেও উত্তরণ ঘটবে। এছাড়া ২০৩০ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০৩১ সাল নাগাদ উচ্চ মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশকে খাপ খাওয়াতে চলতে হবে। বিশেষ করে বর্তমানে চলমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করতে হলে এর উপযোগী জনশক্তি প্রস্তুত করার বিকল্প নেই। আর সেই মাপের মানবসম্পদ তৈরি করতে হলে গুণগত শিক্ষা প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। এ শিক্ষা প্রসারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী।

একসময় এসব বেসরকারি হাইস্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হতো স্থানীয়ভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে। তখন হরহামেশাই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠত। শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর বিষয়টি ছিল একপ্রকার নৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর এ পরিস্থিতির উন্নতি সাধিত হয়েছে বৈকি। এখন কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষক বাছাই কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ফলে নিয়োগে দুর্নীতির সুযোগ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে বলা চলে। কাজেই এ প্রক্রিয়ায় যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের সুযোগও বেড়েছে। এসব শিক্ষক যাতে গুণগত শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করা জরুরি। সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি ভেবে দেখবে বলে বিশ্বাস।