শিক্ষা উপকরণের আকাশচুম্বী দাম!

অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীর দাম যেমন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কলম থেকে শুরু করে বই-খাতা সবকিছুর দামই বেড়েছে অতি উচ্চ হারে। আগে যে খাতা কেনা হতো বিশ টাকায় তা এখন চল্লিশ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কলম প্রতি দাম বেড়েছে দুই থেকে পাঁচ টাকা। বইয়ের কাগজের দাম বাড়ার অজুহাতে প্রতি বইয়ের দাম দ্বিগুণ রাখছে অনেক ব্যবসায়ী। এসব উপকরণের দাম যেমন বেড়েছে, একইসঙ্গে কমেছে এর মান। এই গলাকাটা দামে মানহীন পণ্য বিক্রি করে অনেক ব্যবসায়ী হয়তো লাভবান হচ্ছে কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষাব্যবস্থায় যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তাও স্বাভাবিক। দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান যারা টিফিন খরচ জুগিয়ে খাতা-কলম কিনত তারা উৎসাহ হারাবে পড়াশোনায়। যারা মধ্যবিত্ত তারা আরও কম দ্রব্যে কীভাবে প্রয়োজন মেটানো যায় সেটা ভাববে। গুটিকয়েক ধনী ব্যক্তি ছাড়া প্রায় সকল মা-বাবারই সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে এরূপ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নাভিশ্বাস উঠাচ্ছে সাধারণ জনগণের। বেঁচে থাকার খাদ্যের দাম যেখানে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেখানে পড়াশোনা বিলাসিতায় পরিণত হতে খুব বেশি দেরি নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি, দ্রব্যমূল্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং ব্যবসায়ীদের শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক দৃষ্টি পারে এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে। পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে যাওয়ার আগেই সরকারের সচেতন দৃষ্টি নিবদ্ধ হোক। সর্বোপরি, শিক্ষাসামগ্রীর আকাশচুম্বী দামের কারণে পড়াশোনা যেন বিলাসিতায় পরিণত না হয়, মানুষ যেন শিক্ষাকে গ্রহণ করতে পারে আপন হাতের মুঠোয় পুরে।

মাকসুদা আক্তার

শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০