Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:03 am

শিক্ষা প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক এক নির্বাহী প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় আট কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মোনায়েম হোসেন দুদকের ‘সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১’-এ গত ৩১ জানুয়ারি মামলাটি করেন। দুদক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মামলার আসামি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা নজরুল ইসলাম (৬২) ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানা। গত বছরও ওই প্রকৌশলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিলেন দুদকের উপপরিচালক মোনায়েম হোসেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অবৈধ আয়ের এসব টাকা বৈধ করতে এফডিআরসহ ১১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯৮৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১২ মার্চ পর্যন্ত ছয় কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা জমা রাখা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে ছয় কোটি ৬৮ লাখ ১৬ হাজার ৯১৮ টাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু আসামি শিরিন সুলতানা কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ঋণ বাদে এক কোটি ২৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬০৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, তার সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি ১২ লাখ ৭০ হাজার ৯১৮ টাকা। শিরিন সুলতানার সম্পদ বিবরণী ও আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা

যায়, আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৮৬ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯১ টাকাসহ শিরিন সুলতানা তার স্বামী মির্জা নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় হস্তান্তর/রূপান্তরের মাধ্যমে অবৈধভাবে ছয় কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬০ টাকাসহ জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত মোট সাত কোটি ৭২ লাখ ৭৪ হাজার ১৫১ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।

শিরিন সুলতানা ও মির্জা নজরুল ইসলাম মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও (৩) ধারা ও দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

একই ধরনের অভিযোগে দুদকের ‘সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১’-এ কমিশনের উপ-পরিচালক মোনায়েম হোসেন ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর একটি মামলাটি করেছিলেন। ওই মামলায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা নজরুল ইসলামের (৬২) সঙ্গে তার ছেলে মির্জা অনিক ইসলামকেও (২৭) আসামি করা হয়। আসামি অনিক ইসলামের বিরুদ্ধে মামলায় সাত কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৫০ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন, গোপন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর এ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে মির্জা নজরুলের বিরুদ্ধে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী থাকাকালে মির্জা নজরুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে ‘দুর্নীতি’ সম্পৃক্ত অপরাধে অর্জিত অবৈধ আয় বৈধ করার পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে তার ছেলে অনিক ইসলামের নামে চারটি ব্যাংকে সাতটি হিসাব খোলেন। এসব ব্যাংক হিসাবে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সাত কোটি ৩১ লাখ ৬৪ হাজার ১৬২ টাকা জমা করে পরেবর্তীকালে সাত কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৫০ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু দুদকের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে অনিকের নামে দুই লাখ ৬৫ হাজার ১৬৮ টাকার সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।