নিজস্ব প্রতিবেদক:শিগগির ঢাকা থেকে নিউইয়র্কে আবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার নিউইয়র্কের হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ আশার কথা জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী গত রোববার বাংলাদেশ বিমানে নিউইয়র্কে এসেছেন। বাংলাদেশ বিমানে আমরা আগে নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে যেতাম বহু বছর আগে। তারপর বিমানটা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমাদের বিমান এখানে এসেছে। আমাদের প্রত্যাশা আগামীতে বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক টু ঢাকা এই লাইনটা চালু হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটি চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চুক্তিটি বেশ ভালো পর্যায়ে রয়েছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী।’
জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আসার পরই বিমানের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বেড়েছে বলে মন্তব্য করে মোমেন বলেন, ‘আমেরিকাবাসী খুব খুশি হবে যদি বাংলাদেশ থেকে এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) বিমান চালু হয়। সুখবর হলো তারা বিমানকে এলাও করেছে। আমি সেজন্য আশা করি আগামীতে নিউইয়র্ক-ঢাকা বিমান চালু হবে। তবে ফ্লাইট চালুর সঠিক তারিখ জানি না।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক ‘ভিন্ন মাত্রা’ পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের ‘যথেষ্ট সম্মান’ জানিয়েছে বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কে বিমান থেকে নামার পরপরই আমাদের সবাইকে সরাসরি গাড়ি করে হোটেলে নিয়ে আসা হয়। ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত কোনো ধরনের সমস্যায় আমাদের পড়তে হয়নি। এই সম্মানটা এখানে আমরা কেবল পেয়েছি শুধু শেখ হাসিনার জন্য। এখন অনেক দেশ নিজে থেকে আমাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে আলোচনা করতে চায়। অথচ আগে একটা সময় পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল।’
১৯৯৩ সালে ডিসি-১০ উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা থেকে নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছিল বিমান। কিন্তু ১৯৯৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এ রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ওই বছর আবার ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হলেও সর্বশেষ ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দেশের উড়োজাহাজের ফ্লাইট চালাতে হলে সে দেশের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাসোসিয়েশনের (এফএএ) ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র দরকার হয়। বাংলাদেশের এ ছাড়পত্র না থাকায় ২০০৬ সালে এফএএর নিষেধাজ্ঞায় ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়।
বিমানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত হওয়ায় বিমান এখন নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনা করতে সক্ষম। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে ভবিষ্যতে তারা ঢাকা-নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায়।
