শিগগির প্রিমিয়ার সিকিউরিটিজ শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলার রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুল আলোচিত প্রিমিয়ার সিকিউরিটিজ মামলার রায় খুব শিগগিরই দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ১৯৯৬ সালের শেয়ার কারসাজি মামলায় চার সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও তাদের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদের জেরা শেষ হয়। আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠন করা বিশেষ ট্রাইব–্যনালের বিচারক আকবর আলী শেখ।

এ মামলার আসামিরা হলেন- এমএ রউফ চৌধুরী, সাঈদ এইচ চৌধুরী, প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান ও পরিচালক আনু জায়গীরদার। মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। এ সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে। এর মধ্যে শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে। মামলার ১ নম্বর আসামি প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ ওই সময়ে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করে, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

স্টক এক্সচেঞ্জের রেকর্ড মোতাবেক আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করেন। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। যার মধ্যে ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার।

একইভাবে আসামিরা ডিভিপি মাধ্যম ছাড়াও স্থানীয়ভাবে শেয়ারের অন্যতম ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। আসামিরা ওই সময়ের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৫টি শেয়ার বিক্রি করেন। এর মধ্যে ডিভিপির মাধ্যমে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭০০টি শেয়ার বিক্রি করেন। আর এখানেও অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ার ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫০০টি।

আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি, অপকার ও অনিষ্ট করেছে, যার কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ-১৯৬৯ এর ২১ ধারা বলে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৯৯৭ সালের ২৭ মার্চ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা খান জানান, বুধবার প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলার সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে জেরা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ৮ মার্চ সময় নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর রায়ের জন্য শুধু যুক্তিতর্ক পর্ব বাকি থাকবে। মামলাটির রায় দ্রুত পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এদিকে একই মামলায় আসামি মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। উচ্চ-আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে এই আসামিদের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে, যা আগামী ২ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

আলোচিত এই মামলার সাক্ষী মনিরউদ্দিন আহমেদকে গতকাল জেরা করেন আসামি এমএ রউফ চৌধুরীর আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম ও আবদুস সালাম খান এবং আসামি সাঈদ এইচ চৌধুরীর আইনজীবী আলহাজ মো. বোরহান উদ্দিন।

এর আগে ১৮ জানুয়ারি এ মামলার অপর ৩ সাক্ষী ডিএসই’র মহাব্যবস্থাপক রুহুল খালেক, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ দেলোয়ার হোসেন ও বিএসইসি’র সহকারী পরিচালক এনামুল হককে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। আসামিদের এই মামলায় দুই দফায় ৬ মাস করে ১ বছরের স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ-আদালত। প্রথমবার ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল এ বিচারকাজে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। আর ২৯ নভেম্বর দেওয়া হয় দ্বিতীয়বারের মতো ৬ মাসের স্থগিতাদেশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০