Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:49 pm

শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসায়ীদের আরও সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা মহামারিতে (কভিড-১৯) ঘোষিত ঋণ প্যাকেজ থেকে ব্যবসায়ীদের আরও বেশ কিছু সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসায়ীরা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে মূলধনি ঋণ নিতে পারবেন। গতকাল এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন সিদ্ধান্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ব্যবসায়ীদের এক লাখ কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজ দেওয়া হয় শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসায়ীদের। এর মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়নযোগ্য আবর্তনশীল স্কিম ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে অর্থ সরবরাহ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই তহবিল থেকে ব্যবসায়ীরা চলতি মূলধন হিসেবে ঋণ নিতে পারবেন। আগের নেওয়া ঋণের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ মূলধন হিসেবে নিতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের সুদহার ধরা হয়েছে চার শতাংশ।

ব্যাংকগুলো এই তহবিল থেকে চার শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তাদের ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে। এর মধ্যে অর্ধেক, অর্থাৎ সাড়ে চার শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণ গ্রহীতারা। অবশিষ্ট সাড়ে চার শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে সরকার।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপে অর্থনৈতিক ক্ষত মোকাবিলায় সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, ঋণখেলাপিরা সেই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে না। শুধু ঋণখেলাপি নয়, তিনবারের বেশি ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন, এমন ব্যবসায়ীরাও এ তহবিল থেকে ঋণ পাবেন না। এ ঋণের মেয়াদ হবে তিন বছর, তবে সরকার প্রথম বছরে সুদ হিসেবে অর্ধেক বা সাড়ে চার শতাংশ বহন করবে।

এর আগের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ঋণগ্রহীতাদের সর্বশেষ স্থিতির আলোকে গ্রাহককে নতুন ঋণ দেবে ব্যাংকগুলো। এটি হবে ব্যাংক ও গ্রাহকদের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে।

গতকাল ওই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন করে বলা হয়, ঋণ আবেদনের তারিখের আগের সর্বশেষ মাসের স্থিতির ওপর নির্ভর করে এটি নির্ধারণ করা হবে। এর ফলে অনেক গ্রাহকের ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

নীতিমালা অনুযায়ী, এ ঋণ ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদিত হতে হবে। প্রতিটি ঋণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের পর ঋণ তহবিল ছাড় করা হবে। যেদিন থেকে অর্থ ছাড় হবে, ঋণের তারিখ তাই হবে। এর আগে আবেদন করলেও তারিখ ছাড়করণের দিন থেকেই শুরু হবে। অবশ্য এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে হলে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সরকার যে সুদ প্রদান করবে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেওয়া হবে। এজন্য ঋণ অবেদনের ফরমেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। ঋণসংক্রান্ত সব তথ্য প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হবে।