শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী তার জন্য দৈনিক ক্যালরি, প্রোটিন অনুপুষ্টি মিলিয়ে খাবার ও খাওয়ানোর তালিকা তৈরি করা উচিত। শিশুর যথেষ্ট খিদে আছে কি নেই, তা যাচাই না করে খাওয়ানোর প্রবণতা ভালো নয়। বেশিরভাগ মা যথেষ্ট খাবার খাওয়ানোর পরও মনে করেন, সন্তানের ভরপেট খাওয়া হয়নি, সে আরও খেতে পারবে। এতে নানা বিপত্তি দেখা দিতে পারে। পরিমাণ ও গুণগতÑদুভাবেই শিশুর অতিরিক্ত ভোজন হতে পারে।
বেশি খাওয়ানোর কারণ
কোন বয়সের শিশুর জন্য কোন কোন পুষ্টিমাণসম্পন্ন খাবার প্রয়োজন, পরিমাণে কতটা খাওয়ানো প্রয়োজন, এ ব্যাপারে সঠিক ধারণা না থাকা।
মা-বাবা ও অভিভাবকদের শিশুকে বেশি বেশি খাওয়ানোর মনস্তাত্ত্বিক (সাইকোলজিক্যাল) প্রবণতা।
শিশুকে বুকের দুখ খাওয়াতে মায়ের অনীহা। শিশুকে ফিডারে-বোতলে করে ফর্মুলা বা গুঁড়া দুধ খাওয়ানো মন্দ সংস্কৃতি।
বেশি খাওয়ানোর কুফল: বেশি বেশি খাওয়ানো হলে খাওয়ানোর পরপরই শিশু বমি করে দিতে পারে। অনেক শিশুর এই বমির প্রবণতা বেশি বয়স পর্যন্ত থেকে যায়।
খাবার উগরানো রোগের কবলে পড়তে পারে শিশু।
চর্বিজাতীয় ও শর্করাজাতীয় খাবার বেশি খাওয়ানো হলে শিশুর পেট ফাঁপে।
পেট ফোলা বা অতিরিক্ত বায়ু নিষ্কাশন হতে পারে।
ওজন অস্বাভাবিক বেশি হতে পারে।
কী করা উচিত
# শিশুর প্রতিদিনের খাবারের রুটিন যাচাই করে দেখা।
# শিশুর উচ্চতা অনুযায়ী ওজনের পরিমাপ বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) নির্ণয় করা।
# শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী তার জন্য দৈনিক ক্যালরি, প্রোটিন অনুপুষ্টি মিলিয়ে খাবার ও খাওয়ানোর চার্ট করা।
# দেখতে নাদুসনুদুস শিশুকে স্বাস্থ্যবান বলা যায় না, বরং শিশুর বয়স অনুযায়ী সঠিক ওজনপ্রাপ্তি হলে সে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান এ কথা মা-বাবাকে বোঝানো।
# শিশুকে প্রথম ছয় মাস শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো এবং পরিপূরক খাবারের সঙ্গে কমপক্ষে দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত।
অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল