শিশুদের হাসিতে ঝলমলে বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিশুদের উপস্থিতিতে বইমেলা পেয়েছে এক অন্য রূপ। আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে বইমেলায় আয়োজন করা হয় ‘শিশুপ্রহর’। গতকাল মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়। বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। বইয়ের প্রতি শিশুদের আগ্রহ সৃষ্টিতে বইমেলায় গতকাল ও আজ পালিত হচ্ছে শিশু প্রহর। এ সময়ে শিশুরা তাদের অভিভাবকসহ মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে বই সংগ্রহ করতে পারবে এবং শিশুরা এ সময়টি কাজেও লাগিয়েছে।

গত বছর করোনার কারণে ছিল না এ আয়োজন। এবারও মেলার প্রথম সপ্তাহে ছিল না। গতকাল শুরু হলো ‘শিশু প্রহর’। এ সময় বিভিন্ন বয়সের শিশুদের রঙিন সাজ আর কোলাহলে ঝলমল করছিল মেলার শিশু চত্বর।

শিশুতোষ ধারাবাহিক নাটক ‘১২৩ সিসিমপুর’-এর মূল চরিত্র টুকটুকি, হালুম, শিকু আর ইকরি শিশু প্রহরের মূল আকর্ষণ। তাদের উপস্থিতিতে শিশুদের প্রাণে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দধারা, শিশুরা মেতে ওঠে

উল্লাসে। মহাখালী থেকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে এসেছে আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন। সে বলে, ‘কালকে জেনেছি আজ সকালে শিশু প্রহর হবে। আর তাই ভাইয়ার কাছে আবদার করলাম মেলায় নিয়ে আসার জন্য। মেলায় এসে অনেক মজা করেছি, বই কিনেছি। টুকটুকি, হালুম, ইকরি ও শিকুদের সঙ্গে ছবি তুলেছি।’

ছুটির দিনে দুই সন্তানকে নিয়ে মিরপুর থেকে মেলায় এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আসলে মেলাটা সব বয়সের মানুষের। সবাই আসেন, সবাই পছন্দমতো বই কেনেন। ১৯৯৮ সালে বাংলা একাডেমি ‘শিশু প্রহর’ চালু করার পর থেকে ছুটির দিন সকালটা শিশুদের। যদিও গত বছর করোনার কারণে ছিল না, এবারও প্রথম সপ্তাহে ছিল না। আজ থেকে শুরু হয়েছে। বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। তাদের আনন্দ দেখে নিজের শিশুকালের স্মৃতি মনে পড়ে যাওয়ায় ভালো লাগে।’

সিসিমপুর স্টল ইনচার্জ নূর মো. আল রাজি বলেন, ‘আসলে শিশুদের জন্য আমরা প্রতিবছর এ আয়োজন করে থাকি। গতবার করোনার কারণে করতে পারিনি। শঙ্কা কাটিয়ে এবার করতে পেরেছি। খুব ভালো লাগছে। ছোট ছোট শিশুর নির্মল হাসি দেখে মনে হয়, যেন স্বর্গের ফুল ফুটেছে।’

প্রকাশকরাও জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এবার মেলায় বইয়ের প্রতি শিশুদের আগ্রহ বেড়েছে। তারা মোবাইল রেখে আস্তে আস্তে বইমুখী হচ্ছে।

এ বিষয়ে শিশুচত্বরের মেলা প্রকাশের প্রকাশক এমএস দোহা বলেন, গতবার তো আমরা করোনার জন্য আশানুরূপ ফল পাইনি, অর্থাৎ মেলাটা সেভাবে জমেনি। তবে গতবারের তুলনায় এবার মেলা ভালো হচ্ছে এবং লোকসমাগম অনেক বেশি। সব মিলিয়ে এবারের মেলাকে ইতিবাচক মেলা বলা যায়।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন করোনার জন্য একটা বড় সময় শিশু-কিশোররা বই থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। এ জায়গাটা মোবাইল-ইন্টারনেট দখল করে নিয়েছে। তবে এখন সেগুলো থেকে বেরিয়ে তারা বইমুখী হচ্ছে। এটা ভালো দিক।

চিলড্রেন বুকস সেন্টারের স্বত্বাধিকারী জগলুল সরকার বলেন, মেলার প্রথম প্রহরে শিশুরা না এলে আমাদেরও ভালো লাগে না। বই বিক্রি বড় বিষয় নয়, কিন্তু আমরা শিশুদের বই প্রকাশ করি, তাদের জন্য কাজ করি। এ অবস্থায় শিশুরা এলে আমাদের ভালো লাগে। শিশুরা আসছে বাবা-মায়ের হাত ধরে। তারা বই দেখছে, কিনছে এটা ভালো দিক, আমাদেরও ভালো লাগছে।

এদিকে শুক্রবার মেলার শুরু থেকেই বইপ্রেমীরা আসতে থাকেন দলবেঁধে। সন্তানদের বই কিনে দেওয়ার পাশাপাশি অভিভাবকরাও নিজেদের পছন্দের বইটি সংগ্রহ করেছেন স্টলে ঘুরে ঘুরে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০