শিশুর ক্যালসিয়ামের ঘাটতি

ক্যালসিয়াম হƒৎপিণ্ডের পেশিসহ অন্যান্য মাংসপেশির স্বাভাবিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে; অস্থির বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি স্নায়ুর কার্যক্রমও নিয়ন্ত্রণ করে। জটিল রোগে আক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন শিশুদের মধ্যে যাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে, তাদের মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। প্যারাথাইরয়েড হরমোন, ক্যালসিটনিন ও ভিটামিন ডির পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের অভাব হতে পারে।

যেসব নবজাতক অকালে বা স্বল্প ওজন নিয়ে জš§ নেয়, যাদের জšে§র পর শ্বাস নিতে দেরি হয় বা মায়ের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকে, তাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে খিঁচুনি হতে পারে। শিশু জš§গতভাবে প্যারাথাইরয়েড হরমোন বা ম্যাগনেশিয়ামের অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হলে নবজাতক বা অল্প বয়সী শিশুর ক্যালসিয়ামের অভাবে খিঁচুনি বা মাংসপেশির কম্পন হতে পারে।  গর্ভাবস্থায় মা অতিমাত্রায় ভিটামিন ডি’র স্বল্পতায় ভুগলে বা শিশু জšে§র পর থেকেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পেলে শিশুর ক্যালসিয়ামের অভাবে খিঁচুনি হতে পারে। শিশু রিকেটস রোগ নিয়ে জš§গ্রহণ করতে পারে বা রিকেটস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অল্প বয়সী শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ালে বা কিডনির সমস্যার কারণে শরীরে ফসফেট বেড়ে গেলে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে।

মাংসপেশির কম্পন/টেটানি বা হাত বেঁকে আসা ও খিঁচুনি। মাংসপেশির দুর্বলতা, পেশিতে টান অনুভূত হওয়া। শ্বাসযন্ত্রের স্পাসম বা খিঁচুনি। মানসিক অবস্থার অবনতি, মনোযোগ কমে যাওয়া। চোখ ও মস্তিষ্কের স্নায়বিক সমস্যা। দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। হƒৎপিণ্ডের স্পন্দনে সমস্যা ও হার্ট ফেলিউর। অস্থির সমস্যা ও রিকেটস প্রভৃতি।

দুধ ও দুধজাত খাবার ক্যালসিয়ামের বড় উৎস, তবে একমাত্র উৎস নয়। মায়ের দুধ শিশুকে দুই বছর পর্যন্ত খাওয়াতে হবে। গরুর দুধ ও কৌটার দুধ কোনো অবস্থাতেই খুব ভালো খাবার নয়। শিশুর ছয় মাস পূর্ণ হলে ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে পরিবারের স্বাভাবিক খাবারের অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ডিম, ছোট মাছ, ডাল, বাদাম প্রভৃতি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। জরুরি ভিত্তিতে অতি সাবধানতার সঙ্গে শিরায় ক্যালসিয়াম দিতে হবে, পাশাপাশি প্রয়োজনমতো ভিটামিন ডি দিতে হবে। ম্যাগনেশিয়ামের অভাব থাকলে ইনজেকশনের মাধ্যমে তা পূরণ করতে হবে।

ডা. রবি বিশ্বাস

শিশু হরমোন রোগবিশেষজ্ঞ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০