শিশুর জন্য ভিটামিন ‘ডি’

ভিটামিন ‘ডি’র অভাবে শিশুদের বিশেষ ধরনের রোগ রিকেটস হতে দেখা যায়। শরীরের ত্বকে সূর্যালোক লেগে এই ভিটামিন ‘ডি’ উৎপন্ন হয়, পরে তা যকৃত হয়ে কিডনিতে পৌঁছায় এবং হরমোনের মতো কাজ করে। এর কাজ অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণ করে শরীরে ক্যালসিয়াম বাড়াতে সাহায্য করা। এ ছাড়া দেহের নানা বিপাকজনিত বিক্রিয়ায় ভিটামিন ‘ডি’ ভূমিকা পালন করে থাকে। মাখন, পনির, দুধ, ডিম, কলিজা ভিটামিন ‘ডি’তে সমৃদ্ধ। তবে সূর্যের আলোই প্রধান উৎস।

শিশুদের কীভাবে ভিটামিন ‘ডি’র অভাব ঘটে

ক. দেহত্বকে আলট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাবে ভিটামিন ‘ডি’ উৎপাদনের মোক্ষম সময় হলো সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। একালের শিশুরা হয় স্কুলে, নয়তো ঘরে থাকে। বাইরে খেলাধুলার প্রবণতাও কমে গেছে; খ. বেশি পোশাকে আবৃত শিশু, বিশেষ করে শীতের দেশের শিশুরা ভিটামিন ‘ডি’ থেকে বঞ্চিত হয়; গ. বেশি মেঘলা দিন, অতিরিক্ত বাষ্প, কলকারখানাজনিত পরিবেশদূষণে সূর্যালোক পৃথিবীর মাটিতে যথাযথ পৌঁছাতে পারে না। ঘ. ত্বকের মেলানিন (প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন) যদিও ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়, এটি কিন্তু ভিটামিন ‘ডি’ উৎপাদনে বাধা দেয়। এ জন্য একই পরিমাণ ‘ডি’ ভিটামিন পেতে এশিয়ানদের তিন গুণ বেশি সময় সূর্যালোকে থাকতে হয়। যদিও খাবার থেকে সংগৃহীত ভিটামিন ‘ডি’ (যেমন মাছের তেল, মাংস, ডিমের কুসুম, কডলিভার অয়েল, দুগ্ধজাত খাবার) বেশি পাওয়া যায় না, তবু স্কুলের খাবারে তা জোগানো হলে ঘাটতি কমানো যায়; ঙ. অতিরিক্তি সানস্ক্রিন ব্যবহার ভিটামিন ‘ডি’র কার্যকারিতা কমায়; চ. জেনেটিক ফ্যাক্টও কারও কারও ক্ষেত্রে কাজ করে; ছ. প্রসূতি মায়ের ভিটামিন ‘ডি’র অভাব থাকলে শিশুরও হবে; জ. শিশুর স্বাভাবিক অনাবৃত অংশে, যেমনÑমুখ, হাত-পা সপ্তাহে ২-৩ দিন প্রতিবার ২০ মিনিটের মতো রোদ লাগলেই শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয়ে যায়।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০