Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:21 pm

শিশুর ডেঙ্গুজ্বরে যা করবেন

করোনা সংক্রমণের মধ্যে এবার বর্ষার শুরু থেকে ডেঙ্গু রোগীও বাড়ছে। শিশুরাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের ডেঙ্গুজ্বরে নানা জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি আছে।

অন্যান্য বছর ডেঙ্গু ভাইরাসের ডেন-১ বা ডেন-২ ধরনের সংক্রমণ দেখা গেছে। কিন্তু এবার এই ভাইরাসের ডেন-৩ ও ডেন-৪ ধরনের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। আক্রান্ত রোগীদের অনেকেরই যকৃতে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে; কিডনির কার্যকারিতায়ও বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। পানি আসছে বুকে ও পেটে এবং মাঝে মধ্যে নিউমোনিয়া দেখা যাচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে ঘাম, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসা, রক্তচাপ কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এবার তাই জ্বর হলেই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর কথাও মাথায় রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।

পরীক্ষা: যে কোনো জ্বরের রোগীরই ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো উচিত হবে। তবে জ্বর যদি পাঁচ দিনের বেশি থাকে ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়লে আনুষঙ্গিক অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হবে। এর মধ্যে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট অন্যতম। এই পরীক্ষায় প্লাটিলেট পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। পাশাপাশি শিশুর রক্তের গ্রুপ জেনে নিন। ডেঙ্গুর পরীক্ষার পাশাপাশি করোনার পরীক্ষাও করাতে হবে। কারণ, কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে এখন দুটি সংক্রমণ একসঙ্গেই হতে দেখা যাচ্ছে।

করণীয়: জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা ইত্যাদি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গু ধরা পড়লে শিশুকে বিশ্রামে রাখুন, প্রচুর পানি বা তরল খেতে দিন। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সিরাপ বা বড়ি ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা পরপর খেতে দিন। ডেঙ্গুতে ২-৩ দিন পর যখন জ্বর কমে যায়, তখনই জটিলতা দেখা দেয়ার সময়। এ সময় প্রায় প্রতিদিন রক্তের অণুচক্রিকার পরিমাণ দেখা উচিত।

অণুচক্রিকার সংখ্যা কমতে থাকলে শিশু বারবার বমি করলে, খেতে না পারলে, পেটে ব্যথা হলে, শিশুর মধ্যে অতি অস্থিরতা বা নিস্তেজ ভাব দেখা দিলে, মুখ-দাঁত-নাক দিয়ে রক্তপাত হলে কিংবা কালো পায়খানা অথবা কালো রক্তবমি কিংবা রক্তের মতো প্রস্রাব করলে অবশ্যই হাসপাতালে নিন। মুখ-চোখ ফ্যাকাসে মনে হলে, হাত-পা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা মনে হলে, ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রস্রাব না করলে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

মশার কামড় থেকে বাঁচাতে শিশুদের সাদা বা হালকা রঙের ফুলহাতা পোশাক পরান। হাতে-পায়ে মশা নিরোধক মলম লাগাতে পারেন। বাড়িতে নেট ও মশারি ব্যবহার করুন।

ডা. এটিএম রফিক উজ্জ্বল

রেজিস্ট্রার, শিশুরোগ বিভাগ

হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, ঢাকা