বর্ষা মৌসুম এডিস মশা প্রজননের সময়। এ সময় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। তাই এই মৌসুমে কোনো শিশুর জ্বর হলে ডেঙ্গুর বিষয়টি মনে রাখতে হবে। আক্রান্ত শিশুর লক্ষণ সাধারণত কয়েকটি ধাপে হয়ে থাকে।
প্রথম ধাপে আক্রান্ত শিশুর অনেক জ্বর হয়। পাশাপাশি আক্রান্ত শিশুর মাথাসহ সারা শরীরে ব্যথা হয়, বমি বমি ভাব বা বমি হয়। অনেক সময় শরীরে লালচে র্যাশ হতে পারে।
ক্রিটিক্যাল ধাপে শিশুর জ্বর আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং কমার সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যায়। অনেক সময় শিশুর নাক বা দাঁতের গোড়া থেকে বা প্রস্রাব বা বমির সঙ্গেও রক্ত আসতে পারে; শরীর চুলকাতে থাকে; কখনও কখনও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল স্পট পড়ে, রক্ত জমে কালচে দাগ হয়ে যায়; এ ধাপে শিশুর ব্যবহারে বিরক্তিভাব বা অস্থিরতা দেখা যায়; অনেক সময় রক্তচাপ কমে যায়; কোনো ধরনের জটিলতা না হলে শিশু ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।
জ্বর হলে কি করবেন: দৈনন্দিন পরিচর্যা, খাবার আগের মতোই থাকবে। তবে একটু প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো ভালো; জ্বর কমাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল দিতে হবে। তবে জ্বর বা শরীরের ব্যথা কমাতে অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধ দেওয়া যাবে না; বেশি বেশি তরল দিতে হবেÑ যেমন পানি, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি। প্রতিদিন এক থেকে দুই প্যাকেট খাবার স্যালাইন দিতে হবে; শিশুর প্রস্রাব ঠিকমতো হচ্ছে কি না, খেয়াল করতে হবে।
মা-বাবাকে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে; শিশুকে অতিশয় দুর্বল বা অস্থির দেখাচ্ছে কি না; নাক বা দাঁতের গোড়া থেকে বা বমির সঙ্গে রক্ত আসছে কি না; শরীরের কোনো জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধার মতো মনে হচ্ছে কি না; শিশু বারবার বমি করছে কি না।
কখন হাসপাতালে নিতে হবে: জ্বরে আক্রান্ত শিশু বারবার বমি করলে; পেট ফুলে গেলে; পেটে অনেক বেশি ব্যথা হলে; নাক বা মুখ থেকে বমির সঙ্গে রক্ত বের হলে বা শরীরের কোথাও রক্ত জমাট বাঁধা কালচে দাগ দেখা গেলে; শিশুর ব্যবহারে অস্থিরতা দেখা গেলে বা ঝিমানো ভাব থাকলে; শ্বাসকষ্ট হলে। এসব লক্ষণের কোনো একটি দেখা গেলে দ্রæত শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।
অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ