Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:09 pm

শিশুর থালায় থাকুক সুষম খাবার

শিশুর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার শ্রেষ্ঠ সময় শৈশব। এ সময় তাদের প্রতিদিনের খাবারের থালায় যেন সুষম খাবার সাজানো থাকে, সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখা উচিত।

স্বাদ ও বৈচিত্র্য: শিশুর বয়স ছয় মাস পূর্ণ হলে ঘরে তৈরি আধা শক্ত ও আধা তরল খাবারের জোগান দিতে হবে। এই পরিপূরক খাবারে সিরিয়াল, ডাল, দানাদার শস্য ও চিনি থাকা উচিত। এতে সে ভালো মানের প্রোটিন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি ও অন্যান্য অণুপুষ্টি লাভ করবে। যখন শিশু নিজে থেকে খেতে পারার ক্ষমতা অর্জন করে, তখন তাকে খাবার খেতে সাহায্য করতে হবে। অনেক সময় শিশু খাবার নিয়ে তা মুখের ভেতরের দিকে ঠেলে গিলতে পারে না, খাবার বের হয়ে আসে। এর মানে এই নয় যে, শিশু সেই খাবার পছন্দ করছে না, বা খাবার খাওয়ার বয়স হয়নি। সহযোগিতা পেলে সে ধীরে ধীরে এসব খাবার গলাধঃকরণের নৈপুণ্য অর্জন করে নেয়। সব বয়সের শিশুর প্রতিদিনের খাবারে অসম্পৃক্ত চর্বি, দানাদার শস্য, সবজি ও ফলমূল থাকা প্রয়োজন।

পরিবেশ ও সতর্কতা: আনন্দদায়ক পরিবেশ শিশুর খাবার গ্রহণে সহায়ক। যেমন পরিবারের সবাই মিলে যদি একসঙ্গে খেতে বসে, তাহলে সবার সঙ্গে সেও হাসিখুশিভাবে আহারে যোগ দেয়। শিশু যখন সজাগ থাকে, তখন তাকে খাবার দেয়া উচিত। তার খাবারের বাটি যেন আলাদা করে রাখা হয়। শিশুকে খাবার দেয়ার আগে তার জন্য তৈরি খাবার ও খাবার পরিবেশন নিরাপদ আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।

রান্না করা খাবার পারতপক্ষে দুই ঘণ্টার মধ্যে খাওয়ানো ভালো। তা না করা গেলে খাবার ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর গরম করে অথবা রেফ্রিজারেটরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রেখে নিরাপদ রাখা যায়।

অসুস্থতায় করণীয়: শিশু অসুস্থ হলে তাকে স্বাভাবিক সময়ের সুষম খাবার যেমন ডাল, দুধ ও সবজি অল্প অল্প পরিমাণে বারবার খেতে দিতে হবে। বারবার পানীয় ও তরল খাবার দিতে হবে এবং যে শিশু বুকের দুধ পান করে, তাকে ঘনঘন মাতৃদুগ্ধ পান করাতে হবে। অসুখের সময় শিশু কখনও যেন উপোস না থাকে বা খাবার নিয়ন্ত্রণ যেন না করা হয়।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল