পাইলস বা ‘অর্শ’ একটি অত্যন্ত পরিচিত রোগ। শিশু থেকে শুরু করে ৫০ বছর বয়সী সবারই এ রোগটি হতে পারে।
বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাইলসও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ রোগ যে শিশুদের হতে পারে এটা অনেকেই চিন্তা করেন না। যখন রোগটি বেশ জটিল আকার ধারণ করে, তখন অভিভাবকদের নজরে আসে। আপনার শিশু কিংবা কিশোর মলদ্বার বা মলদ্বারের পাশে চুলকানি, জ্বালা-যন্ত্রণার কথা বললে পাইলসে আক্রান্ত ধারণা করা যেতে পারে।
কারণ
শিশু ও কিশোরদের পাইলস হওয়ার একমাত্র কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য। সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়ার ফলে মলত্যাগ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে মলত্যাগের সময় মলদ্বারে চাপ পড়ে। এতে মলদ্বারের রক্তনালির ওপর চাপ পড়ে। ফলে পাইলস বা অর্শের উৎপত্তি হয়।
চিকিৎসা
শিশু ও কিশোরদের পাইলসের চিকিৎসা বেশ কষ্টসাধ্য। তারা সমস্যাগুলো সঠিকভাবে বলতে পারে না। ওষুধ খাওয়ানোও অভিভাবকদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। শিশুদের একমাত্র কার্যকরী প্রক্রিয়া হলো খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন। একমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেই শিশু ও কিশোরদের পাইলসের উৎপত্তি। শিশুদের যাতে মলত্যাগ করতে কষ্ট না হয়, সে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আঁশযুক্ত ও তরলজাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, পাকা পেঁপে, কলা, আম, ফলের রস, বেদানা, আপেল মলকে নরম করতে সহায়তা করে। যেসব শিশু মায়ের দুধ খায়, তাদের কদাচিৎ কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। যেসব শিশু বেবি ফর্মুলা বা গরুর দুধ খেয়ে থাকে, তাদের বেবি ফর্মুলা নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তুত করতে হবে। গরুর দুধ খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে গরুর দুধ ঘন করে খাওয়াতে হবে।
শরীরচর্চা বা খেলাধুলাও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। সারাদিন বসে থাকলে বা বেশিরভাগ সময় শুয়ে বা ঘুমিয়ে থাকলে অন্ত্রের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ব্যায়াম, দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করে। ফলে মলত্যাগ সহজ হয়। শরীরচর্চা ক্ষুধামান্দ্যও দূর করে। সব ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। যেহেতু শিশু ও কিশোরদের পাইলস সচরাচর দেখা যায় না, তাই কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। রোগটি জটিল আকার ধারণ করার আগেই যেন সঠিক সময়ে চিকিৎসা পায়।
ইন্টারনেট অবলম্বনে শিপন আহমেদ