Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 5:51 pm

শীতের খাবারে সচেতন থাকুন

পিঠাপুলি ছাড়া বাংলার শীত যেন পরিপূর্ণ হয় না। শীতের ঐতিহ্যবাহী বাহারি পিঠা খাওয়ার রীতি বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ। এ সময় পাড়া-মহল্লায় ছোট-বড় সবাই পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠে।

গ্রামাঞ্চলে যেমন শীতের রকমারি পিঠার আয়োজন করা হয়, শহরেও এখন পথের ধারে পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে। শীতকাল পিঠা খাওয়ার মৌসুম হওয়ার কারণ এ সময় নতুন ধান ওঠে; আর নতুন আতপ চালের গুঁড়া দিয়েই তৈরি হয় নানারকম পিঠা। পিঠার অন্যতম উপাদান চালের গুঁড়া হলেও এর সঙ্গে লাগে গুড় ও ক্ষীরসহ নানা উপকরণ। এসব উপকরণের সঙ্গে শীতের একটি যোগসূত্র আছে। এর সবই শর্করাজাতীয় খাবার। সে কারণে পিঠায় ক্যালরি বেশি, রক্তে শর্করা বাড়ায়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ফ্যাটিলিভার, রক্তে কোলেস্টেরল বা কিডনি রোগে যারা ভুগছেন, হাঁসের মাংস তাদের এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ হাঁসের মাংসে চর্বি বেশি থাকে, আর চামড়াসহ খাওয়া হয় বলে এ মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি।

শীতে নানারকম শাকসবজি ওঠে বাজারে। এসব শাকসবজির পুষ্টিমান অনেক। তাই প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সবজি মিলিয়ে খান। সবজি স্যুপ করে খেলে শীত কাটবে। তীব্র শীতে গরম স্যুপে লেবুর রস মিশিয়ে বা লেবু-চা পান করলে যেমন শীত কাটে, ঠাণ্ডা বা সর্দি-কাশিতেও আরাম হয়। যাদের টনসিল, হাঁপানি ও ঠাণ্ডার সমস্যা আছে, তারা কুসুম গরম পানি পান করলে স্বস্তি পাবেন। এ সময় গরম চা, দুধ ও স্যুপ পান করা খুবই উপকারী। সবজি রান্না করে না খেয়ে ভাপে সিদ্ধ করে খেলে পুষ্টি যেমন বেশি পাবেন, আবার শরীরও চাঙা থাকবে। ডায়াবেটিস বা ওজন বেশি হলে পিঠা-পুলি খাওয়ার সময় সতর্ক থাকবেন, কেননা চালের গুঁড়া ও গুড় ওজন ও শর্করা বাড়ায়। কেউ যদি এক বেলা পিঠা খান, তাহলে অন্য বেলায় শর্করা কম খেয়ে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করবেন। ডায়াবেটিস রোগীকে দৈনিক শর্করা নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। পিঠা খেলে ভাত বা রুটি বাদ দিতে হবে, কারণ এগুলোর সবই শর্করা। গুড়ের পরিবর্তে সবজি দিয়েও পিঠা তৈরি করা যায়।

শীতে যেহেতু ক্যালরি গ্রহণ বেড়ে যায়, তাই ক্যালরি বেশি ক্ষয় করতে হবে। শীতে অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন, বিশেষ করে বয়স্করা ঠাণ্ডায় বাইরে যেতে চান না। তাই হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম যায় কমে। তা না করে বরং সক্রিয় থাকুন। ঠাণ্ডা লাগলে ঘরের ভেতরে ব্যয়াম করুন। বাড়িতে হাঁটাহাঁটি করুন। বাড়তি ক্যালরি ঝেড়ে ফেলুন।

– ইসরাত জাহান, পুষ্টিবিদ