শীতের শুরুতে বাড়তি সতর্কতা

প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে পরিবর্তনের হাওয়া। শীত আসন্ন। শীতকাল তুলনামূলকভাবে আরামদায়ক হলেও এ সময়ে কিছু বাড়তি রোগ দেখা দেয়, বিশেষত শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জটিলতার হার বেশি। ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি ও জ্বর হওয়ার আশঙ্কা এ সময় অনেক বেশি। শীতে শ্বাসতন্ত্রের রোগ বৃদ্ধি পায়। ঠাণ্ডা ও ফ্লুর কারণে কাশি হয়। ঠাণ্ডা জ্বর সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ও প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস, লালা, হাঁচি-কাশি থেকে নিঃসরিত ভাইরাসের মাধ্যমে সর্দি-কাশির সংক্রমণ হয়।

ঠাণ্ডা জ্বর হলে প্রাথমিকভাবে বাসায় কিছু নিয়ম মানলে ও ওষুধ সেবনেই সাধারণত চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে তা সেরে যায়। তবে উপসর্গ বেশি দিন দীর্ঘায়িত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। কভিড ও ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো আছে কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। জ্বর হলে অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক খান। মনে রাখবেন সাধারণ ফ্লুতে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। জ্বর কমানোর জন্য বাসার ঘরোয়া কিছু পদ্ধতির সঙ্গে প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে (সীমিত সময়ের জন্য) এবং সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পেতে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধও খাওয়া যায়। ঘরোয়া পদ্ধতির মধ্যে জ্বর নিবারণে তোয়ালে দিয়ে শরীর মোছা, নিয়মিত ও সঠিক সময়ে গোসল, গোসল করতে না চাইলে কপাল ও ঘাড়ের ওপর ঠাণ্ডা পানিতে ভেজা নরম কাপড় রাখা (দীর্ঘক্ষণ নয়) এবং সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পেতে আদা ও মসলা চা, মধু ও তুলসীপাতা বেশ উপকারী। এ ছাড়া ভিটামিনযুক্ত খাবার গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘদিন জ্বর ও সর্দি-কাশি থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শীতে ঠাণ্ডা, জ্বর ও কাশি থেকে রক্ষা পেতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। যেমন ঠাণ্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার, কুসুম কুসুম গরম পানি পান, ধুলাবালু ও ধূমপান এড়িয়ে চলা, প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা, বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক ব্যবহার, সঠিক সময়ে গোসল ও দ্রুত গোসল শেষ করা, ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, শীতে হাতে-পায়ে মোজা, মাথায় টুপি ও গলায় মাফলার ব্যবহার করা।

এ ছাড়া আসন্ন শীতকালে কভিড সংক্রমণ বৃদ্ধিরও আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সে ক্ষেত্রে কভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধিসহ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা শীতের শুরুতেই ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা নিয়ে নিতে পারেন।

ডা. সামিউল আউয়াল

আবাসিক চিকিৎসক, এভারকেয়ার হসপিটাল, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০