Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:32 am

শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ

প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: তীব্র শীতে কাঁপছে দেশের উত্তরের জনপদ। দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বেড়েই চলছে শীতের প্রকোপ। এ ছাড়া দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও বগুড়ায় মৃদ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। ফলে কনকনে শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব এলাকার গরিব, অসহায় ও খেটে খাওয়া শীতার্ত লোকজন।

গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, এ জেলা থেকে হিমালয় অনেক কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও শীত মৌসুমে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে এ জেলার তাপমাত্রা ওঠানামা করায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং বরিশাল জেলাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে কুয়াশা পড়তে পারে। রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

জানা গেছে, বিকালের পর থেকে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। সঙ্গে ঘন কুয়াশা আচ্ছাদিত থাকে; যা স্থায়ী থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কাটিয়ে খানিকটা সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ থাকছে না। এ জেলায় ওপর দিয়ে সবসময় হিমেল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। কনকনে শীতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষ। তারা কনকনে শীতে তেমন কাজ করতে পারছেন না। কাজের সন্ধানে বের হলেও অনেকে কাজ না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিবছর শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও অনেকের ভাগ্যে তা জোটে না।

জেলা প্রশাসন জানায়, এখন পর্যন্ত জেলার ৫ উপজলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় মোট ৩৪ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্রের চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, শনিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। তবে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে।

এদিকে নীলফামারীতে সাতদিন ধরে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। কনকনে শীতে কাবু হয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে মানুষ। গতকাল সকাল ১০টায় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার একই সময় তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পারদের ওঠানামায় শীতে কাবু হয়ে পড়েছে গবাদি পশুসহ বস্ত্রহীন মানুষ।