শীত এলে অনেকের মুখ ও ঠোঁটের চারপাশে ছোট ফোসকার মতো পড়ে। এ ধরনের ঘা এড়াতে ঠোঁট ও মুখের আশপাশের ত্বক আর্দ্র রাখার চেষ্টা করুন। সানস্ক্রিনসহ লিপবাম ব্যবহার করুন। শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের প্রবেশ রোধে নিয়মিত হাত পরিষ্কার রাখুন। মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
মুখের ভেতর, জিবের ওপর বা নিচে, গাল বা ঠোঁটের ভেতর, মাড়িতে, এমনকি নরম তালুতে একধরনের গোল বা ডিম্বাকৃতির লালচে ঘা দেখা যায়। শুষ্ক বাতাসের কারণে শীত মৌসুমে মুখের নরম টিস্যুগুলো সংক্রমণপ্রবণ হয়ে ওঠে। তাই শীতে এ ধরনের ঘা বেশি দেখা যায়। মুখে জমে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে মুখের লালা খুব দরকারি। কিন্তু শীতকালে শুষ্ক বাতাসের কারণে মুখে লালা কমে যায়। ফলে সংক্রমণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া শীতে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। মসলাদার ও অ্যাসিডিক খাবারের কারণে এ ধরনের ঘা আরও বাড়তে পারে। তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।
মুখ শুষ্ক হওয়ার সমস্যা থাকলে এ সময়ে আরও বাড়বে। প্রচুর পানি পান করুন। শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত রোগ ও ফ্লু শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। এ কারণে মাড়িতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়, বাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দাঁতের যতেœ আরও বেশি সচেতন হতে হবে। যদি আগে থেকেই মাড়ি ফোলা থাকে, রক্তপাত হয় বা ব্যথা হয়, তাহলে আগেভাগেই দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শীতে মুখ ও দাঁতের সমস্যা এড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন। প্রতিদিন দুবার দাঁত ব্রাশ করুন। টুথব্রাশের বয়স তিন বা চার মাসের বেশি হলে নতুন ব্রাশ ব্যবহার করুন। তাড়াহুড়া করে বা দুই মিনিটের বেশি সময় ধরে দাঁত ব্রাশ করবেন না। এতে অ্যানামেল ক্ষয়ে হতে পারে। দাঁতের ভেতর আটকে থাকা খাদ্যকণা দূর করতে ফ্লস ব্যবহার করুন। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে প্রতিদিন একবার ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি পান করুন। আঁশযুক্ত ফল ও শাকসবজি, ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। এ সময়ে মুখ ও দাঁতের সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা. শারমীন জামান
ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন