শীতকালে শিশুদের কানের ইনফেকশন অন্যতম একটি সমস্যা। কিন্তু দুঃখজনক হলো আমরা একে খুব একটা গুরুত্ব দিই না, বরং অবহেলা করি। কানের ইনফেকশন বাচ্চার জন্য মোটেও সাধারণ কোনো ব্যাপার নয়। কেননা ইনফেকশন বধিরতায় রূপ নিতে পারে।
লক্ষণ
অতিরিক্ত ব্যথা: যদি দেখেন বাচ্চা ব্যথায় কান্নাকাটি করেই যাচ্ছে, বা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে কাঁদছে তাহলে মনে রাখুন এটি কানে ইনফেকশনের একটি লক্ষণ। এভাবে কাঁদতে থাকলে অবহেলা না করে তার দিকে মনোযোগ দিন। ভালোভাবে দেখুন তার কানে অস্বাভাবিক কিছু রয়েছে কি না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
কানে ইনফেকশন হওয়া: অনেক বাবা-মা শিশুদের লক্ষণগুলো স্বাভাবিক ও সাধারণভাবে নিয়ে থাকেন, যার ফল দাঁড়ায় শিশুর দীর্ঘমেয়াদি কানের সমস্যা। কোনো কোনো সময় তা শ্রবণশক্তি নষ্টের কারণও। কানে ইনফেকশন হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ঠিকমতো ঘুমাতে না পারা: কানে ইনফেকশন চিহ্নিত করার আরও একটি লক্ষণ, শিশু দিন ও রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। কারণ কানে ইনফেকশন হলে শুয়ে থাকলে ব্যথা বেড়ে যায়। এমনকি শোওয়ার কারণে কানে চাপ পড়ায় শিশু ঘুম থেকে জেগে উঠবে। শিশু কখন ঘুমায়, কতক্ষণ ঘুমায়Ñএগুলো মায়ের জানা থাকে, তাই এসব কিছুতে অনিয়ম দেখলে কিংবা ঘুমাতে কষ্ট পেতে দেখলে ধরে নিতে পারেন শিশুর কানে ইনফেকশন হয়েছে।
কান দিয়ে তরল বের হওয়া: সোনামণির কানে ইনফেকশন হয়েছে কি না সেটা বোঝার আরও সহজ উপায় হলো কান থেকে তরল কিছু বের হচ্ছে কি না তা লক্ষ করা। বেশিরভাগ শিশুর কানে ইনফেকশন হলে কান থেকে হলুদ বা সাদাজাতীয় তরল বের হবে। এমন হলে দেরি করবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ঠাণ্ডাকাশি ও শ্বাসনালিতে প্রদাহ: শিশুর অতিরিক্ত ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যা ও শ্বাসনালিতে প্রদাহ কানে ইনফেকশনের ওয়ার্নিং সাইন। খুব বেশি ঠাণ্ডা-কাশিতে ভুগলে সেটিকে সাধারণ মামুলি সমস্যা বলে সব সময় এড়িয়ে যাবেন না। বাড়তি মনোযোগ দিন। শিশুর সঠিক যতœ ও সুরক্ষার দায়িত্ব আপনার।
প্রতিকার
হাত পরিষ্কার রাখুন। কোনো রোগজীবাণু যেন হাতে লেগে না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ঠাণ্ডা বা ফ্লুর জীবাণু হাত থেকেই স্থানান্তরিত হয়। তাই ঠিকমতো হাত ধোয়া কানের ইনফেকশন প্রতিরোধের অন্যতম সহজ উপায়
সিগারেটের ধোয়া থেকে শিশুকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন
অতিরিক্ত শব্দপ্রবণ এলাকায় শিশুকে নিয়ে যাবেন না
সোনামণিকে একদম চিত করে শুইয়ে দুধ বা অন্য কোনো তরলজাতীয় খাবার খাওয়াবেন না। এমনকি ঘুমন্ত অবস্থায় বাচ্চাকে শুইয়ে দুধ খাওয়ালে তা নাক দিয়ে কানে ঢুকতে পারে।
ছয় মাসের কম বয়সী শিশুরা প্রায়ই কানের ইনফেকশন ও কানে ব্যথার কারণে জ্বরে ভুগে থাকে। বাচ্চার যদি ১০২ ডিগ্রি বা তার চেয়ে বেশি জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।