ঋতু পরিবর্তনের ফলে শিশুরা অল্পতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পরে। এমনিতেই শিশুর যত্নে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। তবে শীতকালে চাই বাড়তি যত্ন। সাধারণত শীতকালেই ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশিসহ অন্য রোগের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। এছাড়া কিছু ভাইরাসঘটিত রোগ শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ একটু অসাবধানতা ডেকে আনতে পারে বড় সমস্যা।
শীতে শিশুর যত্নে করণীয়
গোসলের আগে তেল মালিশ করা যেতে পারে। এ কাজে আমাদের দেশে সরিষার তেল খুবই প্রচলিত। এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের বেবি লোশন পাওয়া যায়। তবে শিশুর ত্বক যদি বেশি শুষ্ক বা সেনসেটিভ হয়, তবে সরিষার তেল না দেওয়াই উত্তম
৫ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যে গোসল সারতে হবে। কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে এবং রুমের তাপমাত্রা যেন বেশি ঠাণ্ডা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে
শিশুদের এ সময় দুই-তিন লেয়ারের কাপড় পরানো উচিত। যাতে গরম লাগলে ওপরের এক দুই লেয়ার খুলে দেওয়া যায়। বেশি শীত পড়লে এ সময় হাত মোজা, পা মোজা ও কানটুপি পরিয়ে রাখতে হয়
এ সময় ঠাণ্ডাসহ নানা রোগের জীবাণুু চারদিকে ছড়িয়ে থাকে। বাচ্চার হাত তাই বারবার কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে দিতে হবে। শিশুকে খাওয়ানোর আগে ও তার ডায়াপার পরিবর্তনের পর পরিচর্যাকারীর হাত ভালোমতো ধুতে হবে
যেসব শিশু বুকের দুধ পান করে তাদের ঘন ঘন দুধ দিতে হবে, যেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকে
এ সময় তরল খাবার কম খাওয়া হয় বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তাই অল্প অল্প করে হলেও বারবার তরল খাবার দিতে হবে। ঠাণ্ডা কিছু না দিয়ে কুসুম গরম তরল দিতে হবে
অনেক বাচ্চা রাতে গায়ে কোনো কাঁথা রাখতে চায় না। তাই ঘুমানোর আগে তাদের ফুল সিøভ গেঞ্জি, পায়জামা বা রম্পার পরিয়ে দেওয়া যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, সে যেন কোনোভাবেই ঘেমে না যায়
বিছানা বালিশ ঠাণ্ডা থাকায় অনেক শিশু বিছানায় শুতে চায় না। তাই এ সময় শিশুকে বিছানায় নেওয়ার আগে তার বিছানাটা গরম করে নিন
শীতের রাতে ঘুমের ভেতর অনেক শিশুর নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে এক ফোঁটা ন্যাসাল স্যালাইন ড্রপ দিতে পারেন। এতে নাকের অতিরিক্ত মিউকাস সরে যাবে ও ড্রাইনেস কমে যাবে। ফলে শিশু স্বাভাবিক শ্বাস নিতে পারবে
শীতে শিশুর ত্বক অনেক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই এ সময়ে উন্নত মানের বেবি অয়েল অথবা মিল্ড লোশন ব্যবহার করতে হবে
শীতকালে শিশুকে প্রতিদিন গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে তিন দিন গোসল করালেই চলে। কারণ প্রতিদিন গোসল ও সাবান ব্যবহারের ফলে শিশুর ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়
বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই শরীরে ভালোমতো ময়েশ্চারাইজার মাখিয়ে নিতে হবে
শীতে শিশুর পাশাপাশি মায়েরাও নিজের দিকে খেয়াল রাখবেন। অনেক সময় মায়ের অসুখ সন্তানের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে।