সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) রাজস্ব আদায়ের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে শীর্ষ একশ গৃহকর খেলাপির তালিকা প্রস্তুত করেছে। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডভিত্তিক আটটি সার্কেলের মাধ্যমে এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ তালিকায় প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে গৃহকর পরিশোধ করেননি এমন ভবন মালিকের নামও স্থান পেয়েছে। ইতোমধ্যে তালিকা অনুযায়ী খেলাপিদের কাছে বকেয়া গৃহকর পরিশোধের জন্য নোটিশও দেওয়া শুরু করেছে চসিক। তালিকাভুক্ত ভবন মালিকদের মোটিভেট করেও গৃহকর আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজস্ব বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, তালিকা অনুযায়ী ৪১টি ওয়ার্ডে আটটি সার্কেলের অধীনে শীর্ষ একশ ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবন মালিকের কাছে চসিকের পাওনা বকেয়া গৃহকরের পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৬ টাকা। এর মধ্যে ১ নম্বর সার্কেলের অধীনে দক্ষিণ পাহাড়তলি, কুলগাঁও, জালালাবাদ, পাঁচলাইশ, পশ্চিম ষোলোশহর, নাসিরাবাদসহ সাতটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ২৫ ভবন মালিকের বকেয়া গৃহকরের পরিমাণ এক কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ২৪১ টাকা। ২ নম্বর সার্কেলের অধীনে চকবাজার ও মোহরা ওয়ার্ডের শীর্ষ সাত ভবন মালিকের বকেয়া গৃহকর ২২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৬ টাকা, ৩ নম্বর সার্কেলের পশ্চিম বাকলিয়া ও বক্সিরহাট ওয়ার্ডের শীর্ষ ৭ খেলাপির গৃহকরের পরিমাণ ২৪ লাখ ২১ হাজার ৯৬৭ টাকা, ৪ নম্বর সার্কেলের সদরঘাট ও আলকরণ ওয়ার্ডের শীর্ষ ১২ খেলাপির গৃহকরের পরিমাণ ৬৭ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৩ টাকা, ৫ নম্বর সার্কেলের লালখান বাজার ও এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের শীর্ষ ৯ ভবন মালিকের বকেয়া গৃহকর ৯১ লাখ পাঁচ হাজার সাত টাকা, ৬ নম্বর সার্কেলের উত্তর পাহাড়তলি, উত্তর কাট্টলি ও দক্ষিণ কাট্টলি ওয়ার্ডের শীর্ষ ৯ ভবন মালিকের বকেয়া গৃহকরের পরিমাণ ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৫১৮ টাকা, ৭ নম্বর সার্কেলের গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের শীর্ষ সাত খেলাপির বকেয়া গৃহকরের পরিমাণ ৬১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫৫ টাকা এবং আট নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ পতেঙ্গা, উত্তর পতেঙ্গা, দক্ষিণ হালিশহর, উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের শীর্ষ ২৪ জন খেলাপির কাছে চসিকের বকেয়া গৃহকরের পরিমাণ ৬১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৮ টাকা।
জানা যায়, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার নির্দেশে ওয়ার্ডভিত্তিক শীর্ষ একশ গৃহকর খেলাপির তালিকা তৈরি করেছেন কর কর্মকর্তা নুরুল আলম। এসব খেলাপির মধ্যে ১৯৬৫ সাল থেকে কোনো গৃহকর পরিশোধ করেননি এমন ভবন মালিকও আছেন। স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস ইতোমধ্যে পাঁচ গৃহকর খেলাপিকে নোটিশ দিয়েছেন। এর মধ্যে বক্সিরহাট ওয়ার্ডের মোশারফ হোসেন মিন্টু নামে একজন ভবন মালিক গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ৬ লাখ ৪১ হাজার ৩২৫ টাকা বকেয়া গৃহকর পরিশোধ করেছে।
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ ম্স্তুাফিজুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বড় অঙ্কের গৃহকর বকেয়া আছে, এমন একশ ভবন মালিকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রণোদনা ও উৎসাহ দিয়ে এসব ভবন মালিকের কাছ থেকে বকেয়া গৃহকর আদায়ের চেষ্টা করছি। এছাড়া বকেয়া গৃহকর আদায়ের অংশ হিসেবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে খেলাপিদের নোটিশও দিচ্ছি।’ এছাড়া নোটিশ দেওয়ার পর বকেয়া গৃহকর পরিশোধ না করলে খেলাপিদের বিরুদ্ধে ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হবে।’
