শুকনা কাশির যন্ত্রণা লাঘবে

বুকে কফ জমা বা তীব্র কাশির সাধারণ একটা কারণ হলো শ্বাসনালিতে সংক্রমণ। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে জ্বর আসে। এই জ্বর তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সেরে যায়, কিন্তু শুকনা একধরনের কাশিতে ভুগতে হয় আরও কিছুদিন। বেশিরভাগ সময় দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে এমন শুকনা কাশি নিজে থেকেই সেরে যায়। অনেক সময় কয়েক মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। অনেক সময় ভাইরাসের সংক্রমণে শ্বাসনালি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে যায়। এতে কাশির স্থায়িত্বকাল বাড়তে পারে। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেলেও কাশি থেকে যেতে পারে। কভিড-১৯ কিংবা সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রে এ রকম দীর্ঘমেয়াদি কাশি থেকে যাওয়ার ঘটনা অনেক রয়েছে।

সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা করতে হবে: যেকোনো ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। তাই অকারণে এবং অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে মানুষের শরীর ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে পড়তে পারে। এতে অন্য কোনো সংক্রমণ সারিয়ে তোলাও কঠিন হয়। শুধু কাশির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের কোনো প্রয়োজন নেই। কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের কারণে বুকের এক্স-রেতে নিউমোনিয়া দেখা দিলে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। সামান্য কাশি হলেই দোকান থেকে কিনে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রবণতা পরিহার করতে হবে।

কাশি হলেই ফার্মেসি থেকে কফ সিরাপ কিনে খাওয়াও স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। বাজারে প্রচলিত কফ সিরাপ অনেক সময় মানুষের শরীরে খিঁচুনি ও ঝিমুনি ভাব আনতে পারে। অনেক সময় অস্বাভাবিক হƒৎস্পন্দন এবং কিডনি ও যকৃতের সমস্যাসহ নানা ক্ষতির কারণ হয় এসব কফ সিরাপ।

কফ সিরাপে হাইড্রোকার্বন থাকে। মূলত বুকব্যথা ও কাশি দমনে এটি ব্যবহার হয়। হাইড্রোকার্বন মানুষের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এ ছাড়া কাশির সিরাপের বিভিন্ন উপাদানের (গুয়াইফেনেসিন, সিউডোএফেড্রিন, ডেক্সট্রমিথোরিফন ও ট্রাইমেথোপ্রিম প্রভৃতি) কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, ঘুম ঘুম ভাব হয়। সিরাপের মরফিন স্নায়ু ও পেশিকে শিথিল করে দেয়। ইফিড্রিনের কারণে শ্লেষ্মা শুকিয়ে যায়। এমনকি সালবিউটামল ও মন্টিলুকাস্ট-জাতীয় ওষুধও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়।

সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু নিয়ম মেনে চললে সুফল মিলতে পারে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। শুকনা কাশির জন্য গলা খুসখুস করলে হালকা গরম পানিতে একটু লবণ দিয়ে কুলকুচি করতে হবে। শুকনা কাশিতে মুখে লজেন্স, লবঙ্গ, কিংবা আদা, গরম চা-কফি, গরম স্যুপ প্রভৃতি খেলে আরাম মিলতে পারে।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান

মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০