Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:10 am

শুধু জেট ফুয়েলের দাম কমাল বিপিসি!

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সাম্প্রতিক সময়ে আকাশযানের জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে লিটারে ১২ টাকা। অথচ একই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারের অন্যান্য জ্বালানি পণ্যের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে উচ্চ মূল্যে ডিজেল, অকটেন, পেট্রোলসহ অন্যান্য জ্বালানি পণ্য বিক্রি করছে। এতে বিপিসির মুনাফার পাল্লা ভারী হচ্ছে। এমনকি মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগও নেয়নি।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিপিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি অভ্যন্তরীণ রুটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি মূল্য ১৩০ টাকা থেকে ১২ টাকা কমিয়ে ১১৮ টাকা নির্ধারণ করে। যদিও গত বছরের ৭ জুলাই ১১১ টাকা থেকে ১৯ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১৩০ টাকা। আর আন্তর্জাতিক রুটে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের মূল্য ৯০ সেন্ট করা হয়, যা এক মাস আগে ছিল ১ ডলার ২২ সেন্ট । অথচ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেট ফুয়েলের মূল্য ছিল ৪৬ টাকা। অথচ একই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারের ডিজেল, পেট্রোল ও অকটন এবং ফার্নেসের সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। কিন্তু এসব জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় হয়নি।

জ্বালানি তেল বিষয়ক কয়েকটি ট্রেডিং ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ২০২২ সালে ১৩ জুন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রতি মেট্রিক টন ডব্লিউটিআই ক্রুড অয়েলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১২০ ডলার ৯৩ সেন্ট, যা গতকাল লেনদেন হয় ৬৬ ডলার ৭৪ সেন্ট। অর্থাৎ গত নয় মাসের ব্যবধানে ডব্লিউআইটি ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে ৫৪ ডলারের বেশি। আর ব্রেন্ট ত্রুড অয়েলের ২০২০ সালের ১৩ জুন প্রতি মেট্রিক টনের দাম ছিল ১২২  ডলার ২৭ সেন্ট। এটি বিক্রি হয় ৭২ ডলার ৯৭ সেন্টে। অপরদিকে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০২২ সালে জুনে ১৫০ ডলার ছিল পার মেট্রিক টন, যা এখন ১০০ ডলারের ঘরে।     

বিপিসি’র তথ্যমতে, ২০২২ সালের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন ৮০ থেকে ৯০ ডলারের ছিল পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। আর রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর সর্বোচ্চ দরে ওঠে। এতে ১৫০ ডলরের পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ওঠে, যা এখন ১০০ ডলারের ঘরের মধ্যে আছে।

বিপিসির এক কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানি তেলের দাম অনেক কমেছে। ২০২২ সালের শুরু দিকের দর চলে আসছে। কিন্তু ডলারের মূল্য বেশি হওয়ায় কমানো হচ্ছে না জ্বালানি পণ্যের দাম। তবে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। এর মধ্যে বিমানের জেট ফুয়েলের দাম লিটারপ্রতি ১২ টাকা কমানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক বছর আগে মূল্য সমন্বয় র্ফমুলা নিয়ে কাজ করেছিলাম। কিন্তু নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। যখন আমদানিমূল্য কম হবে, তখন দাম কমবে, আর বেশি হলে দামও বেশি হবে, যা এক মাস কিংবা দুই মাস পরপর হতে পারে।

উল্লেখ্য, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বছরে ৭০ লাখ টন, যার পুরোটাই আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন। আর বাকি অন্যান্য জ্বালানি তেল।