রহমত রহমান: আমদানি করা হয়েছে বিলাসবহুল ৭৯টি গাড়ি। শুল্কমুক্ত সুবিধার এসব গাড়ি নিজেদের অফিশিয়াল কাজে ব্যবহার করার শর্ত ছিল। সেই শর্তে অঙ্গীকার করে গাড়ি ছাড় নিয়েছে। কিন্তু নিজেদের অফিশিয়াল কাজে তো নয়, গাড়ি ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। এমনকি রোহিঙ্গা-সংশ্লিষ্ট কাজ করে না, এমন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে গাড়ি। শর্ত বা নিয়ম ছিল শুল্কমুক্ত সুবিধার এসব গাড়ি হস্তান্তরের আগে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। গাড়ি হস্তান্তরে সেই অনুমতিও নেয়া হয়নি, এমনকি এনবিআরকে জানানোও হয়নি। আমদানির পরপরই নিয়মের ‘থোড়াই কেয়ার’ না করে ৭৯ গাড়ি বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতিসংঘ শরণার্থী-বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউএনএইচসিআর নিজেদের ব্যবহারের কথা বলে গাড়ি আমদানি করে দিয়ে দেয় অন্যদের। কঠোর শর্তের শুল্কমুক্ত গাড়ি অন্যদের দেয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, ইউএনএইচসিআর শুল্কমুক্ত গাড়ি নিয়ে পিআর করছে।
অনুসন্ধান বলছে, গাড়ি ইউএনএইচসিআর আমদানি করলেও তারা এসব গাড়ি ব্যবহার করছে না। গাড়ি ব্যবহার করছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, রেড ক্রিসেন্ট, গণস্বাস্থ্য, এনজিও ফোরাম, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল, আডরা বাংলাদেশ, ব্র্যাক, অক্সফাম, কোডেক, আরটিএমসহ বিভিন্ন সংস্থা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বর্তমান সচিব ও বর্তমান শরণার্থী সেলের প্রধানও শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়ি ব্যবহার করেন। সবচেয়ে বেশি ৩৯টি গাড়ি ব্যবহার করে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় (আরআরআরসি)।
ইউএনএইচসিআরের মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা নিয়ম না মেনে এবং অনুমতি না নিয়ে গাড়ি হস্তান্তর করায় হতবাক এনবিআর কর্মকর্তারা। ৭৯টি গাড়ি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে এনবিআর। প্রতিবেদন অনুযায়ী শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করায় ব্যবস্থা নিতে ছয়টি কাস্টম হাউসকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ৪৬ গাড়িতে প্রায় ২৫ কোটি টাকার শুল্ককর পরিশোধে ইউএনএইচসিআরকে দাবিনামা-সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরা ও পুনর্বাসনে কাজ করছে। নিজেদের অফিশিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সময় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করে। ১৯৭৫ সালের এনবিআরের এক আদেশ অনুযায়ী এসব গাড়ি শর্তসাপেক্ষে শুল্কমুক্ত সুবিধায় খালাস দেয়া হয়। ২০০০ সালের এক আদেশ অনুযায়ী এসব গাড়ি হস্তান্তর বা বিক্রির ক্ষেত্রে এনবিআর থেকে লিখিত অনুমতি নেয়ার শর্ত দেয়া হয়েছে। ইউএনএইচসিআর অফিসিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সময় ১১৫টি গাড়ি আমদানি করে। এর মধ্যে ৩৬টি গাড়ি ইউএনএইচসিআর নিজেরা ব্যবহার করলেও ৭৯টি গাড়ি নিয়ম না মেনেই হস্তান্তর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পায় এনবিআর। এরই ভিত্তিতে এনবিআর ছয়টি কাস্টম হাউস (ঢাকা কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, বেনাপোল কাস্টম হাউস, আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস, মোংলা কাস্টম হাউস ও পানগাঁও কাস্টম হাউস), অ্যাসাইকুডা ও ইউএনএইচসিআর থেকে গাড়ি আমদানির তথ্য নেয়, যাতে দেখা যায়, এসব গাড়ি ইউএনএইচসিআর নিজেদের অফিশিয়াল কাজে ব্যবহার করছে না। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে এনবিআর।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৯ বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে ৭০টি জিপ, ছয়টি মাইক্রোবাস ও তিনটি ট্র্যাকার গাড়ি। এসব গাড়ি ব্যবহার করছেন ১২টি প্রতিষ্ঠান-সংস্থা ও তিন ব্যক্তি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭টি গাড়ি ব্যবহার করা হয় শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় (আরআরআরসি)। এর মধ্যে একটি ২০০৯ মডেলের ৪১৬৪ সিসির ল্যান্ড কুসার স্টেশন ওয়াগন, একটি ২০১২ মডেলের ২৯৮৬ সিসির ল্যান্ড কুসার প্রাডো, ২০১৫ মডেলের ২৯৮৬ সিসির তিনটি প্রাডো, ২০১৫ মডেলের ২৯৮৬ সিসির একটি ও ২০১৬ মডেলের ২৯৮৬ সিসির দুটি হায়েস, ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ সিসির দুটি হিলাক্স ডিসি, ২০১৭ মডেলের ২৯৮৬ সিসির চারটি প্রাডো, ২০১৭ মডেলের ২৯৮৬ সিসির তিনটি হিলাক্স ডিসি, ২০১৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার, ২০১৮ মডেলের ১২৮৮০ সিসির একটি ট্র্যাকার, ২০১৮ মডেলের ২৪৮৮ সিসির সাতটি নাভারা, ২০১৮ মডেলের ২৯৮২ সিসির ১০টি প্রাডো এবং ২০১৮ মডেলের ৪১৬৪ সিসির দুইটি ল্যান্ড কুসার।
এ বিষয়ে আরআরআরসির কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, গাড়ি ও চালক ইউএনএইচসিআরের, বেতন দেয় তারা। গাড়ির রেকর্ডও তাদের কাছে, ট্র্যাক করে তারা। সব কাজ তারা করে, আমরা শুধু সরকারের কাছ থেকে বেতন পাই। গাড়ি হস্তান্তরের অনুমতির বিষয় তারা জানেন। আমরা যতটুকু জেনেছি, কাস্টমস একটা দাবিনামা জারি করেছে, যার কারণে গাড়িগুলো বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাতটি গাড়ি ব্যবহার করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়। এর মধ্যে রয়েছেÑ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ মডেলের একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৮ মডেলের ২৪৮৮ সিসির ছয়টি নাভারা গাড়ি। ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআর এসপি অফিসকে এই গাড়ি দিলেও অর্থ মন্ত্রণালয় বা এনবিআরকে অবহিত করে কোনো অনুমতি নেয়নি। ২০১৭ মডেলের ২৯৮৬ সিসির টয়োটা প্রাডো ব্যবহার করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমডিএমআর)। বর্তমানে গাড়িটি ওই মন্ত্রণালয়ের সচিব ব্যবহার করেন। গাড়িটি ওই মন্ত্রণালয়কে দেয়ার আগে এনবিআর থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি এবং কোনো প্রকার শুল্ককর পরিশোধ করা হয়নি। ২০১১ মডেলের তিন হাজার সিসির টয়োটা প্রাডো ব্যবহার করে এমডিএমআরের হেড অব রিফিউজি সেলের প্রধান (শরণার্থী সেল প্রধান)। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস অফিস ২০১৮ মডেলের ২৪৮৮ মডেলের দুটি নাভারা গাড়ি ব্যবহার করে। ২০১৮ মডেলের ২৯৮২ সিসির একটি প্রাডো গাড়ি কক্সবাজারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিস, একই মডেল ও সিসির একটি গাড়ি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, একটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এবং একটি টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ব্যবহার করে। ২০১০ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার গাড়ি ব্যবহার করে কক্সবাজারের বাইতুশ শরফ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি গাড়ি ব্যবহার করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থান কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (কোডেক)।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র চারটি গাড়ি ব্যবহার করে। এর মধ্যে রয়েছেÑ২০১৬ মডেলের ৪১৬৪ সিসির দুটি ল্যান্ড কুসার, ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার। তিনটি গাড়ি ব্যবহার করে এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার স্টেশন ওয়াগন, ২০১৬ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৮ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হায়েস। ২০১৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক সংস্থা সোলিডারিটিজ ইন্টারন্যাশল ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি গাড়ি ব্যবহার করে। একশান সেন্টার ২০১৬ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ব্যবহার করে। আডরা বাংলাদেশ ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৮ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হায়েস গাড়ি ব্যবহার করে।
প্রতিবেদন বলা হয়, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পাঁচটি গাড়ি ব্যবহার করে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৬ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি, ২০১৮ মডেলের ১২৮৮০ সিসির দুই ট্র্যাকার, ২০১৮ মডেলের ২৪৯৪ সিসির দুইটি হায়েস গাড়ি। ২০১৬ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার ব্যবহার করে ব্র্যাক। ২০১৭ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার ব্যবহার করে দাতব্য সংস্থা অক্সফাম বাংলাদেশ। টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনকরপোরেটেড ২০১৬ মডেলের ২৪৯৪ সিসির একটি হিলাক্স ডিসি ও ২০১৭ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার ব্যবহার করে। রিসার্চ ট্রেনিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আরটিএম) ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ মডেলের ৪১৬৪ সিসির একটি ল্যান্ড কুসার ব্যবহার করে।
এনবিআর সূত্রমতে, ৭৯ গাড়ির শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করায় এসব গাড়ি থেকে শুল্ককর আদায়ে ব্যবস্থা নিতে ছয়টি কাস্টম হাউসকে ২৬ এপ্রিল প্রতিবেদন পাঠায় এনবিআর। প্রতিবেদনের সঙ্গে গাড়ির তালিকা দেয়া হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। গড়ত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউএনএইচসিআরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশে বলা হয়, ইউএনএইচসিআর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে ৪৬টি গাড়ি আমদানি করেছে। ২০১৮ সালে চারটি চালানে গাড়িগুলো আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি ব্র্যান্ড নিউ টয়োটা ল্যান্ড কুসার প্রাডো, চারটি ব্র্যান্ড নিউ ল্যান্ড কুসার অ্যাম্বুলেন্স, একটি ব্র্যান্ড নিউ ল্যান্ড কুসার হার্ডটপ ডাইসেল, তিনটি ট্রাক, পাঁচটি হায়েস ও ১৫টি পিকআপ রয়েছে। ইউএনএইচসিআর নিজেদের অফিশিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য এসব গাড়ি আমদানি করেছে। এনবিআরের আদেশের বিধান ভঙ্গ করে এনবিআরের পূর্বানুমতি ব্যতীত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িসমূহ হস্তান্তর করা হয়েছে, যার ফলে কাস্টমস আইন, ১৯৬৯-এর ধারা ৩২(৩) অনুযায়ী ৪৬টি গাড়ির ওপর প্রযোজ্য শুল্ককর ২৫ কোটি দুই লাখ ৮৮ হাজার ৩০ টাকা। এই শুল্ককর পরিশোধ এবং লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউএনএইচসিআরের কক্সবাজারের হেড অব অপারেশন মেরিন ডিন কাস্টোমাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বর্তমানে পোল্যান্ডে কর্মরত রয়েছেন বলে জানান। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় ইউএনএইচসিআরের ঢাকা কার্যালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট কমিউনিকেশন অফিস মোস্তফা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। বক্তব্যের বিষয় মেইলে লিখিত আকারে পাঠাতে বলেন। পরে মেইলে বক্তব্যের বিষয় লিখে পাঠানোর প্রায় দেড় মাস পরও ইউএনএইচসিআর এর পক্ষ থেকে কোনো জবাব দেয়া হয়নি। পরে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ইউএনএইচসিআরের মতো প্রতিষ্ঠান যারা শুদ্ধাচারের কথা বলে, তারা যদি নিজেদের কাজে ব্যবহার করবে বলে গাড়ি আমদানি করে আইন লঙ্ঘন করে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ইউএনএইচসিআর সমানভাবে আইন পরিপালন করবে বলে আমরা আশা করি।’