শুল্কায়নে দাম বাড়ায় খেজুর খালাস বন্ধ চট্টগ্রাম বন্দরে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম কাস্টমসে শুল্কায়নে খেজুরের দাম (ভ্যালু) বেড়েছে। ফলে গত বুধবার (২৯ মার্চ) থেকে খেজুর খালাস বন্ধ রয়েছে। আটকে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা প্রায় চার হাজার টন খেজুর।

গতকাল রোববার কোনো বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়নি। বিষয়টি সুরাহায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। আজকের মধ্যেই একটি সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদী কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এদিকে কয়েক দিন ধরে খালাস বন্ধ হওয়ায় বাজারে খেজুরের সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে  খেজুরের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা তাদের।

জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ফলমন্ডি এলাকায় খেজুর আমদানিকারকদের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও প্রতীক দত্তের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় খেজুর আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি এবং বেশি দামে বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়ম পায় জেলা প্রশাসন। এসব অনিয়মের দায়ে তিন আমদানিকারককে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের।

কাস্টমসের শুল্কায়ন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার থেকে কার্টনে আনা খেজুরের দাম প্রতি কেজি এক ডলার থেকে বাড়িয়ে দুই ডলার ৫০ সেন্ট এবং বস্তায় আনা খেজুর ৫০ সেন্ট থেকে বাড়িয়ে এক ডলার ২৫ সেন্ট করা হয়। যদিও খেজুরের আমদানি শুল্কহার আড়াই কেজির কম ওজনের প্যাকেট ২৫ শতাংশ এবং আড়াই কেজির বেশি ওজনের বস্তা বা কার্টন ১০ শতাংশ হারে নেয়া হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ খেজুরের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে খেজুর খালাস করা যাচ্ছে না। আমরা কাস্টমস কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এখনো তারা কোনো সমাধান দেননি। কাস্টমস কমিশনার এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সমাধান দেবেন। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, বুধবার থেকে কেউ বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেনি। তাই খালাস বন্ধ রয়েছে। আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দাম বাড়ানোর বিষয়ে একটি বাজার জরিপ চলছে।  আশা করি, আজকে সমাধান হয়ে যাবে।

এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ৪০ হাজার ২৪ টন খেজুর আমদানি হয়েছে। এগুলোর গড় মূল্য ৮৯ টাকা ৩৬ পয়সা। কিন্তু ফলমন্ডির আড়তে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কেজি প্রতি আজওয়া ৭৫০ থেকে এক হাজার টাকা, মাবরুম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, মরিয়ম ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দাবাস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, জাহিদি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মেজডুল এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা এবং আলজেরিয়া ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতার যোগসাজশে কম দামে খেজুর আমদানি করে বেশি দামে বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০