শুল্ক অর্ধেক করার পরও বেড়ে চলেছে চিনির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে সরকার। তবু বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েই চলেছে। দেশের বাজারে সরবরাহ কম এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধিকে দাম বাড়ার কারণ বলছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিন্ডিকেট করে চিনির দাম বাড়ানো হচ্ছে।

দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে গতকাল সোমবার মণপ্রতি চিনি বিক্রি হচ্ছে বাজার ৪ হাজার ৮০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৪ হাজার ৬৮০ টাকা। অর্থাৎ মণপ্রতি দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। যদিও ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) সিøপের দাম আরও বেশি।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ টনের মতো চিনি দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি চিনি ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। এসব দেশ থেকে পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত দুইভাবেই চিনি আমদানি করা হয়। দেশের বাজারে পণ্যটির দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গত ১ নভেম্বর পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক অর্ধেক করে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস শাখা। আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

এরপর এখন থেকে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে দেড় হাজার টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে, যা আগে ছিল ৩ হাজার টাকা। আর পরিশোধিত প্রতি টন চিনি আমদানিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩ হাজার টাকা, যা ছিল ৬ হাজার টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, দেশে অপরিশোধিত চিনিই বেশি আমদানি হয়। এসব চিনি পরিশোধন করে বাজারজাত করা হয়। এ ধরনের চিনি আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক কমেছে দেড় হাজার টাকা শুল্ক কমেছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি কমেছে দেড় টাকা। এছাড়া আমদানি, পরিশোধন, বাজারজাতকরণের অন্যান্য খরচ একই রয়েছে। তাই খুব বেশি প্রভাব পড়ছে না। আবার পরিশোধিত চিনিতে টনপ্রতি শুল্ক কমেছে ৩ হাজার টাকা। এ হিসেবে কেজিপ্রতি কমেছে ৩ টাকা করে কমার কথা। এ কারণে শুল্ক কমলেও বাজারে প্রভাব পড়ছে না।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমানে পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে চিনির দাম বাড়ছে। এছাড়া শুল্ক কমানো ছাড়া বাকি খরচ ঠিক থাকলেও বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, দেশে চিনির বাজার কয়েকজনের হাতে নিয়ন্ত্রিত। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই। বাজারে দাম তদারকি করার কথা তাদের তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ সুযোগে যে যার মতো করে পকেট কাটছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম স্বাভাবিক, দেশের সরবরাহ স্বাভাবিক। একই সঙ্গে কমানো হয়েছে শুল্ক। এতদিন তারা দাবি করছিল শুল্ক কমানোর। এরপরও দাম বাড়ার মানে হলো সিন্ডিকেট। বাজারে দাম অন্তত স্বাভাবিক থাকার কথা, কিন্তু উল্টো দাম বেড়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০