Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:52 pm

শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা চায় ইইউ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি আরোপ করা শুল্ক প্রত্যাহার করলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও (ইইউ) সব পণ্যের শুল্ক কমানোর ব্যাপারে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন ইইউর বাজেট কমিশনার গুয়েনথার ওয়েটিঙ্গার। গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য ইইউ প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটন রওনা হওয়ার আগে নিজেদের বোর্ড সভায় তিনি এ প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘ইইউ চায় যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে ইউরোপ থেকে অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাত আমদানির ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করবে’। খবর: রয়টার্স।
গত মার্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইইউ, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। এর জের ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করে ইইউ। ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি ২২ জুন থেকে কার্যকর হয়।
গুয়েনথার ওয়েটিঙ্গার বলেন, ‘প্রথমত আমরা আশা করছি বিদ্যমান শাস্তিমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তারপর আমরা সব খাতের সব শুল্ক কমানো ও পুনর্গঠনের জন্য আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি’। তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে আমরা বাণিজ্য দ্বন্দ্ব নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা এড়াতে চাই’।
একটি জার্মান রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়েটিঙ্গার বলেন, ‘কেউ চাইলে বিদ্যমান শুল্ক ব্যবস্থাকে জটিলতামুক্ত করার চেষ্টা করতেই পারেন। তাহলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবার জন্য শুল্ক কমানো যেতে পারে’। তিনি বলেন, ‘এটা আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে যা এ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আমরা আগামী শরৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এটা শুরু করতে পারি’।
ওয়েটিঙ্গার প্রস্তাব দেন, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র মধ্যে বিদ্যমান ট্রান্সলান্টিক ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারশিপ বা টিটিআইপি নামে পরিচিত চুক্তি নিয়ে আলোচনা করে তা আরও সহজ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘কেউ একটি সহজ টিটিআইপি করার চেষ্টা করতে পারে’।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জাঙ্কার অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপে সৃষ্ট বাণিজ্য উত্তেজনা নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হন। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইউরোপীয় গাড়ি আমদানির ওপর একই ধরনের করারোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে। গত সোমবার কমিশন জানায়, জাঙ্কার যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট বাণিজ্য প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন না। ওয়েটিঙ্গার বলেন, ‘বাণিজ্য যুদ্ধের চেয়ে অন্য যে কোনো কিছু ভালো হবে’।
ইউরোপে গাড়ি আমদানির ওপর অধিক করারোপের বিষয়টি তুলে ধরে ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে, ইউরোপীয় জোট তাদের বাণিজ্যিক ‘শত্রু’। ইইউ কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গাড়ি আমদানিতে ইউরোপ বেশি করারোপ করলেও ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বেশি করারোপ করে থাকে। জাঙ্কারের সফরসঙ্গী ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার সিসিলিয়া মালমস্ট্রম গত সপ্তাহে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাড়ির ওপর কর বাড়ালে তার জবাব দেওয়ার জন্য ইইউ মার্কিন পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করছে।