শেয়ার বিজ ডেস্ক: আগামী ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জলবায়ু-বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন ‘কপ-২৬’। সম্মেলনে এবারের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য। কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনা এবং নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ২০৩৫ ও ২০৫০ সাল মেয়াদি পরিকল্পনা করেছে দেশটি, যা আগামী সপ্তাহে উপস্থাপন করার কথা। তবে নিট জিরো কার্বন নির্গমনে বরিস জনসন সরকারের কৌশল কী হতে পারে, সে বিষয়ে জলবায়ুবিদরা ছয়টি বিষয় উল্লেখ করেন। এ ছয়টি বিষয় মানতে পারলে যুক্তরাজ্য নিট জিরো কার্বন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে মনে করা হয়। খবর: বিবিসি।
ছয়টি বিষয় হলো
১. উষ্ণতায় ভর্তুকি: সবাই একমত যে, আমরা যেভাবে শীতকালে ঘর গরম করি, তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মোকাবিলা করা। তাই সরকার স্পষ্ট করে বলতে পারে, কীভাবে বাড়ি গরম করতে হবে, বিশেষত সামজিক, আবাসন ও ক্লিনার হিটিং উৎসগুলোর ব্যাপারে তাদের আগের ইশতেহার পূরণ করবে। এছাড়া বয়লারের জন্য গ্যাস বিক্রি বন্ধ করার একটি তারিখ নির্ধারণ করতে পারে। গ্যাস বয়লারের জন্য একটি বিকল্প হলো তাপ পাম্প। যদিও এটি চালুর জন্য প্রাথমিকভাবে ছয় হাজার পাউন্ড খরচ করতে হয় বলে মানুষ এটি বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা চাইছেন তাপ পাম্পে ভর্তুকি দিলে তার ব্যবহার বাড়বে। কার্বন কম নিঃসরণ হবে।
২. বার্গার রেট তথা মাংসে উচ্চকর: মাংসের জন্য উচ্চ করহার এবং ফল ও সবজিতে কম করহারের মাধ্যমে কার্বন কমানো যেতে পারে।
৩. স্ট্রিটল্যাম্প চার্জিং পয়েন্ট: বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়লেও পর্যাপ্ত চার্জিং পয়েন্ট না থাকায় ইভিতে চার্জ দেয়া যাচ্ছে না। এজন্য রাস্তার ধারে ধারে চার্জিং পয়েন্ট রাখতে হবে।
৪. জলবায়ু হিসাব: সরকারি চাকরিতে দীর্ঘমেয়াদি নিট জিরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা থাকা, যাতে জলবায়ু তথা কত পরিমাণ কার্বন নির্গমন করছে তার হিসাব থাকা। এজন্য যেভাবেই হোক পরিবর্তনের জন্য কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ তহবিল করা দরকার।
৫. কার্বন কর: যুক্তরাজ্যজুড়ে এরই মধ্যে শিল্পকারখানায় কার্বন কর নির্ধারণ করা আছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মানুষকে কার্বন নির্গমনের জন্য চার্জ করুন। আর তা না করলে মামলা করুন। ব্যবস্থা সংস্থা সিবিআই মনে করে কার্বন কর বৃদ্ধি করলে এবং এ বিষয়ে বিনিয়োগ বাড়ালে কার্বন নির্গমন হ্রাস পাবে।
সিবিআই মনে করে, আমরা যেসব জিনিসি কিনছি তার কি সরাসরি কর দিতে হচ্ছে? তারা বলছে, এ ক্ষেত্রে স্বল্প আয়ের মানুষে জন্য বেশি বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ কার্বন কর তাদের জন্য একটি ধাক্কা। এজন্য সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে এবং উচ্চ আয়ের মানুষের জন্য কার্বন কর বৃদ্ধি করতে হবে। ফলে সরকারের রাজস্বও বাড়বে।
৬. অর্থ বৃদ্ধি করা: বিশেষজ্ঞরা মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে যুক্তরাজ্য সরকারকে। যদিও ব্রিটিনের অর্থমন্ত্রী পরবর্তী দুই বছরের জন্য ৮৫ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন, তবে সিবিআই ও টিইউসি নেতারা মনে করেন, সরকারের এ খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের নীতিতে যা-ই থাকুক না কেন ‘কথা কম কাজ বেশি’ নীতিতে এগোতে হবে।
এদিকে বরিস জনসসন সরকার এরই মধ্যে সবুজ অর্থনীতিতে ৬০০ কোটি পাউন্ড সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন। এ সময় থেকে যুক্তরাজ্যে অন্তত ৫৬ হাজার নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।