Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 6:01 pm

শূন্য মার্জিনেও চাল আমদানি করা যাবে

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাল আমদানিতে ব্যাংকগুলোর এলসি মার্জিনের শর্ত কিছুটা শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ব্যাংকগুলো এখন চাল আমদানির ক্ষেত্রে শূন্য মার্জিনে এলসি খুলতে পারবে। অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকলেও একজন আমদানিকারক এলসি খুলে চাল আমদানিতে করতে পারবে। দেশে অস্থিতিশীল চালের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুবিধা বহাল রাখতে বলা হয়েছে।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি হাওর এলাকায় বন্যা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতিবৃষ্টিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চালের স্বাভাবিক সরবরাহে বিঘœ ঘটায় চালের বাজারে অস্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে বাজারে চালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে শূন্য মার্জিনে ঋণপত্র স্থাপনের জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। এ নির্দেশনা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এত দিন চাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে ব্যবসায়ীদের নগদ অর্থ জমা দিতে হতো। নগদ টাকা না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী ঋণপত্র খুলতে পারতেন না। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যবসায়ীরা চাল আমদানিতে সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন আমদানি সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে উঠেছে চাল। প্রতি কেজি মোটা চাল কিনতে ক্রেতাকে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। সরকারি হিসাবেই দেশে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। চালের এ দরও দেশের মধ্যে নতুন রেকর্ড। এমনকি মোটা চালের দাম বিশ্বে এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি।

দেশে বিগত সময়ে চালের উৎপাদন বাড়ায় ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে চালের আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়। ফলে আমদানি কমে দেশের উৎপাদন দিয়েই চাহিদা মেটানো হয়েছে এত দিন। ওই সময় কিছু চাল আমদানি হলেও তা পরিমাণে নগণ্য।

এমন পরিস্থিতিতে হাওর এলাকায় বন্যা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতিবৃষ্টিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চালের স্বাভাবিক সরবরাহে কমে গেছে। চালের বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দাম বাড়িয়ে চলছে। দাম কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উচ্চ শুল্কে এখনও স্থলবন্দর দিয়েও ভারত থেকে চাল আমদানি হচ্ছে। তবে নানা কারণে চাল আমদানির পরিমাণ খুবই কম। তবে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর মিয়ানমার থেকে দুটি চালানে কনটেইনারে করে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ ১ হাজার মেট্রিক টন চালের একটি চালান নগরের একটি বেসরকারি ডিপোতে খালাসের প্রক্রিয়া চলছে।

খাদ্য বিভাগের দৈনিক খাদ্যশস্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। সব চালই এসেছে বেসরকারি খাতে। এসব চালের বড় অংশই এসেছে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে। এর বাইরে মিয়ানমার থেকে সামান্য পরিমাণে চাল আমদানি হয়েছে।