প্রতিনিধি, শেরপুর : শেরপুর নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উদ্যাপিত হয়েছে গারো সম্প্রদায়ের ‘ওয়ানগালা’ উৎসব। গারোরা বিশ্বাস করে ‘মিসি সালজং’ বা শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন হয়। সেজন্য শস্য দেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির জন্য এ আয়োজন করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের মানুষ।
জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার দুধনই ভাটিপাড়া গ্রামে শুক্রবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এ উৎসবের আয়োজন করেন বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) শেরপুর জেলা শাখা।
গারো রীতিতে উদ্যাপিত এ উৎসবে ফসল দেবতা মিসি সালজংকে উপাসনা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি নিজেদের কৃষ্টি-কালচারের নানা আয়োজনের ফাঁকে ফাঁকে স্থানীয় বিভিন্ন স্তরের অতিথিরা মঞ্চে উঠে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (টিডব্লুএ) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অঞ্জন ম্রং, জেলার শাখার চেয়ারম্যান নীল মাধব হাজং, বাগাছাস সভাপতি সোহার্দ চিরান, শেরপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক রফিক মজিদ প্রমুখ।
ওয়ানগালার গারো রীতির অনুষ্ঠানের পর স্থানীয় ও ঢাকা থেকে আগত ব্র্যান্ড দলের সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গান ও নৃত্যের মাধ্যমে জুম চাষ, ফসল কর্তন ও নতুন ধানের পিঠা ও ‘চু’ বা মদ তৈরি করে তা প্রথমে তাদের দেবতাকে এবং পরে উপস্থিত গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ কারা নানা চিত্র তুলে ধরা হয়।
আয়োজকরা জানায়, গারোরা খ্রিস্টান ধর্মে ধিক্ষিত হওয়ার পর তাদের ওয়ানগালা উৎসব খ্রিস্টান রীতিতে পালন করে আসছিল। তবে গত কয়েক বছর ধরে পৃথকভাবে খ্রিস্টান ও গারো রীতিতে এ উৎসব পালন করে আসছে।
গারোদের বিশ্বাস, ‘মিসি সালজং’ বা শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন। এ শস্য দেবতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির পাশাপাশি ‘পরিবারে ভালোবাসা, আনন্দ, সব পরিবারের মঙ্গল কামনা করে’। এছাড়া দূর-দূরান্তের অনেক আত্মীয়-স্বজন এ ওয়ানগালা উপলক্ষে বেড়াতে আসে। তাদের সঙ্গে অনেকের দেখা-সাক্ষাৎও হয় এ উৎসবকে ঘিরে।