শেরপুরে জোড়াতালির সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

রফিক মজিদ, শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পলাশীকুড়া ও বাতকুচি আমবাগান এলাকায় চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত লোহার সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে হেলে পড়ায় গ্রামবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে। মূল সেতুতে উঠতে বাঁশ-কাঠ ফেলে জোড়াতালি দেয়া হয়েছে। ফলে বেহাল এ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে যে কোনো সময় ভেঙে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় ওই স্থানে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি আমবাগান ও পলাশীকুড়া এলাকায় এলজিএসপির অর্থায়নে স্থানীয়ভাবে চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় সেতুটি। গত বছরের পাহাড়ি ঢলে দুই পাশের মাটি ধসে যায়। পরে গ্রামবাসী মিলে ধসে যাওয়া অংশে গাছ ও বাঁশ দিয়ে কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে যাতায়াত করছেন।

প্রতিদিন রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেল ও সাইকেলসহ হেঁটে আশপাশের এলাকার মানুষ এ সেতুটি পার হন। এ সেতুতে দুই-একটি ছোট যানবাহন কিংবা লোকজন উঠলেই নড়েচড়ে উঠে ও কাঁপতে থাকে।

বিশেষ করে স্কুলগামী ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও বৃদ্ধদের চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে অভাবনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ সেতুটি দিয়ে পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, বাতকুঁচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্কে যেতে হয়।

এছাড়া পলাশীকুড়া, আন্ধারুপাড়া, বাতকুচি, আমবাগান বাজার, বেকিকুড়া, বোনারপাড়া, শেকেরকুড়া, কয়ড়াকুড়ি গ্রাম এবং একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লোকজন প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন।

সেতুতে চলাচলকারী শিশু শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম জানায়, ‘আমরা এ ব্রিজ পার হয়ে পলাশীকুড়া স্কুলে লেখাপড়া করতে যাই। এ ব্রিজটি এখন ভেঙে গেছে; তাই ভয়ে ভয়ে পার হই। এখানে একটি পাকা ব্রিজ বানালে আমরা নির্ভয়ে চলাচল করতে পারতাম।’

অটোরিকশাচালক আবুল কাশেম বলেন, ‘মধুটিলা ইকোপার্ক ও আমবাগান বাজারসহ আশপাশের এলাকায় যাত্রী নিয়ে এ সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়া-আসা করি। সেতুটি এতই নড়ে উঠে, যাত্রীদের নামিয়ে সেতু পার হই। বর্তমানে চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।’

বাতকুচি গ্রামের শিক্ষক জুয়েল মিয়া ও সুমী আক্তার জানান, ‘সেতুর দুই পাশের সংযোগ অংশের মাটি সরে গেছে। সেতুতে মানুষ উঠলে নড়ে উঠে। তাই আমরা একা একা এ নড়বড়ে সেতুতে উঠতে সাহস পাই না। তাই এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।’

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে সেতু এলাকা পরিদর্শন করে যতদ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০