প্রতিনিধি, শেরপুর :পাশ্চাত্য সংস্কৃতির জাঁতাকলে পড়ে ঘরে ঘরে অত্যাধুনিক মোবাইল সহজেই হাতের নাগালে আসায় গ্রামবাংলার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য পুতুলনাচ হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলার একদা প্রাচীন লোকসংস্কৃতির বিনোদন মাধ্যমগুলোর একটি হলো পুতুলনাচ, যা একসময় লোকশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে খুবই জনপ্রিয় ছিল। গ্রামবাংলার বিভিন্ন মেলা ও উৎসবে বসত এই পুতুলনাচ। তবে আজ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিনোদনের জগতে লুপ্ত হতে বসেছে বাংলার এই লোকসংস্কৃতি।
শিশু তš§য় ও রাকিব জানায়, আমরা আমাদের মা-বাবার মুখে পুতুলনাচের কথা শুনেছি এবং টিভিতে দেখেছিলাম একবার, কিন্তু বাস্তাবে এই প্রথম দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে।
পরিবার-পরিজন নিয়ে পুতুলনাচ দেখতে আসা সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম এ পুতুলনাচ শেরপুরের এই শ্যামলী পার্কে চালু করায় খুশি হয়েছি। তাই আমার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসেছি দেখাতে। আমরা সেই ছোটবেলায় দেখেছিলাম, কিন্তু আমার ছেলেমেয়েরা দেখেনি। তারা এ পুতুলনাচ দেখে খুবই এক্সসাইডেট হয়েছে।
জামালপুরের ‘রঞ্জু পুতুলনাচ’ দলের মাস্টার বা পরিচালক মো. বাদল মিয়া বলেন, ‘একসময় বিভিন্ন মেলা ও পার্বণে পুতুলনাচের প্রচলন থাকলেও এখন তা দেখা যায় না। এখন এই শিল্পের সঙ্গে কেউ আসতে চাইছে না, অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। মানুষও খুব একটা আগ্রহ দেখায় না, আর লাভও নেই আগের মতো। তবে আমি আমার দলকে ধরে রেখেছি কেবল লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায়।’
শ্যামলী পার্কের পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ জানান, বাংলার লোকসংস্কৃতি ধরে রাখতে মূলত তাদের এ প্রয়াস। আপাতত এক মাসের জন্য শো চালানো হলেও দর্শকের সাড়া পেলে নিয়মিত চলবে এ পুতুলনাচ। আপাতত এক মাসের জন্য ৫০ টাকা মূল্যের টিকিট ধরা হয়েছে এবং ভেতরে চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শো চালু থাকে। দর্শকদের আগ্রহের ওপর এ পুতুলনাচ স্থায়ী করার ইচ্ছা রয়েছে।