প্রতিনিধি, শেরপুর : শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার তিন উপজেলা ৪ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগায় ও চেল্লাখালী নদীর পানি দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে ঝিনাইগাতী উপজেলার সোমেশ্বরী ও মহারশী নদীর পানি। একইসঙ্গে বাড়ছে জেলার মৃগী, দশআনী ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। এ অবস্থায় স্থানীয়রা আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করছেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪৬ সেন্টিমিটার, ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশী নদীর কাঁচা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভাঙনের ফলে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় কলাচাষি ও মাছচাষিরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর বেশ কয়েকটি নিচু এলাকায় ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। কিছু এলাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা স্মৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ঝিনাইগাতী সদর বাজারে পানি প্রবেশ করায় দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে পানি। ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কে হাঁটু পানি এবং ঝিনাইগাতী বাজারের শতাধিক বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে নদীর বিভিন্ন বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শেরপুরসহ আশপাশের এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। স্থানীয়রা বলছেন, চলমান পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শেরপুর সদর উপজেলায় দেখা দিতে পারে আকস্মিক বন্যা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান বলেন, ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর ভাঙা স্থানে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জেলার সীমান্তের গারো পাহাড় এলাকার নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ফসলসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে ঝিনাইগাতী ও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার জানায়, ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রায় ২০০ হেক্টর জমি আমন ও আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এছাড়া ঢলের পানিতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার কাজ চলছে বলে তিনি জানান।