রফিক মজিদ, শেরপুর: শেরপুরে আবার বন্যহাতি নিধন শুরু হয়েছে। গত এক মাস ধরে জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকায় বন্য হাতির আবাসস্থলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা হামলা করছে। এতে হাতির পাল বিক্ষুব্ধ হয়ে বনের ভেতর বন বিভাগের জমিতে কিছু সবজি বাগান সাবার করে লোকালয়ে এসে স্থানীয়দের বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত নষ্ট করে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়। তাই তারা হাতির গভীর জঙ্গলের বিচরণ স্থলে ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা শুরু করে। সীমান্তবাসীর নিত্যকাজে পরিণত হয়েছে হাতি তাড়ানো। শুধু তা-ই নয়, জেনারেটর ও বিদ্যুতের তার দিয়ে বনের ভেতর ফাঁদ পাতা হয়েছে। বুনো হাতি ও কিছু মানুষের এমন আচরণে আতঙ্কিত নিরীহ জনসাধারণ। ওদিকে বুনো হাতির পাল তাদের আবাসস্থল ছেড়ে অবস্থান নেয় বালিঝুড়ি পাহাড়ে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার ভোর রাতে শ্রীবর্দী উপজেলার বালিঝুড়ি রেঞ্জের মালাকুচা গ্রামের বনে কৃষক আমীর আলীর বাড়ির চারপাশে পাতা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এক বন্য হাতির মৃত্যু হয়। মৃত ওই পুরুষ হাতিটির বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর হতে পারে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এদিকে হাতির মৃত্যুর পর ওই কৃষক হাতির শরীর থেকে বিদ্যুতের তার খুলে ফেলেন। পরে বালিঝুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার মো. রবিউল ইসলাম খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও হাতির প্রাথমিক সুরতহাল পরীক্ষা শেষে পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করেন।
উল্লেখ্য, গারো পাহাড়ের নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবর্দী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গত ১০ বছরে ১০ থেকে ১২টি হাতি মারা পড়ে। এ সময় হাতির আক্রমণে প্রায় অর্ধশত মানুষ মারা যান। ফসলের ক্ষেত ও ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে কোটি টাকার। এমতাবস্থায় সরকার হাতি-মানুষ সহাবস্থানের জন্য নানা প্রকল্প নিলেও কোনোটি সফল হয়নি।
হাতির মৃত্যুর বিষয়ে বালিঝুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, হাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে ধারণা করা হচ্ছে হাতিটি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। তবে চূড়ান্ত তথ্য ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এছাড়া এ বিষয়ে শ্রীবর্দী থানায় নিয়মিত মামলা করা হবে।