শেষ সময়ে শেয়ার কেনার চাপে সূচক ইতিবাচক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সূচকের নেতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেষ ঘণ্টায় শেয়ার কেনার চাপে ইতিবাচক হয়। তবে বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয় এবং লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় কমে গেছে। গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই বিক্রির চাপ শুরু হলে সূচক নেমে যেতে থাকে। একপর্যায়ে ১৯ পয়েন্ট নেমে যায়। এ অবস্থায় দুবার কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। তবে শেষ ঘণ্টায় হঠাৎ কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ১৫ পয়েন্ট ইতিবাচক থেকে লেনদেন শেষ হয়। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সব সূচক ইতিবাচক থাকলেও বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন হয়। তবে লেনদেন বেড়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৩৯৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ২৫৪ দশমিক ১৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস ৩০ সূচক ৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৯০৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন তিন লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা হয়। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৪৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৪১ লাখ টাকা। এদিন ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮০টি শেয়ার এক লাখ আট হাজার ১৩০ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৩৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৭টির, কমেছে ১৫২টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে খুলনা পাওয়ার। ৩৮ কোটি ৩২ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৫৫টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ছয় টাকা ৮০ পয়সা বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সামিট পাওয়ারের ২৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার, অ্যাকটিভ ফাইন, ভিএফএস থ্রেড, স্কয়ার ফার্মা, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস, বিবিএস কেব্লস, ইনটেক ও সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার। এরপরে অ্যাডভেন্ট ফার্মার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, ইনটেকের দর ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, মেঘনা সিমেন্টের দর ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেডের দর ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ, বিবিএস কেব্লসের ছয় দশমিক ১৩ শতাংশ ও তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া অ্যাকটিভ ফাইনের দর ৫ দশমিক ২১ শতাংশ, খুলনা পাওয়ারের দর ৫ দশমিক ২০ শতাংশ ও মুন্নু সিরামকসের দর ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ দর কমেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের। সিমটেক্সের দর ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ কমেছে। এছাড়া পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দর ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৪ শতাংশ ও স্টাইল ক্রাফটের দর ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। এছাড়া সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজ ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স ৩ দশমিক ২২ শতাংশ ও এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ কমেছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৭ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৬৪ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৫ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ৬০৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৭টির, কমেছে ১১৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির দর।
সিএসইতে এদিন ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে ২২ কোটি ১৫ লাখ ১২ হাজার ৭১০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির সাত কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরে সামিট পাওয়ারের দুই কোটি ৭২ লাখ টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার দুই কোটি তিন লাখ, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের দুই কোটি, সিলভা ফার্মার এক কোটি ৮১ লাখ, এসকে ট্রিমসের ৯৫ লাখ, ইনটেকের ৮১ লাখ, বেক্সিমকোর ৭৬ লাখ, যমুনা ব্যাংকের ৬৭ লাখ ও বিএসআরএম লিমিটেডের ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।