শেষ হলো চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: বর্তমান বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট চলছে। এক্ষেত্রে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ সম্ভব না হলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের রিজার্ভ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। ছয় মাসের অধিক আমদানি ব্যয় নির্বাহ করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ নির্দেশক সন্তোষজনক। তবে ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের মাধ্যমে শিল্প ও সেবা খাতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ২৯তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২২ এ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যাওয়ার্ড প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এসব কথা বলেন। চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, চৈজ্ঞঙ্কার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বৈং চৈজ্ঞঙ্কার পরিচালক ও সিআইটিফৈ-২০২২ কমিটির চৈয়ারমঞ্ঝান এ. কে. এম. আক্তার হোসেন বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, ওমর ফারুক, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, এস এম তাহসিন জোনায়েদ, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম), সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের আঠার বছরের ঊর্ধ্বে ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ প্রদান এবং নিজেদের কর্মীদের দক্ষ করার লক্ষ্যে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।  

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, চিটাগাং চেম্বার ব্যবসা, বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অর্থনৈতিক গতিধারাকে সহায়তা করতে সরকার বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বে-টার্মিনাল নির্মাণ, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত করা এবং মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর বাস্তবায়ন করছে।

 জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, করোনা অভিঘাতের পরেও সরকারি ইনসেনটিভসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৫-৬% প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়েছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে টানেল, গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার রেললাইন, বে-টার্মিনাল ইত্যাদি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে দশ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে বন্দর সচল রাখা এবং চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক নির্বিঘেœ চালু রাখার ক্ষেত্রে চেম্বার সবসময় সরকারের সঙ্গে কাজ করে থাকে। দেশীয় বিভিন্ন পণ্যের পরিচিতির লক্ষ্যে প্রতি বছর চেম্বার এই মেলা আয়োজন করে। তিনি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বে-টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন করা, মেলার জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যু প্রদান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সরকারি দপ্তরগুলোর ক্ষমতায়ন, আইসিডিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ব্লু-ইকনোমির সম্ভাবনার সদ্ব্যবহারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠান শেষে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে জুরি বোর্ড কর্তৃক শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্যাভিলিয়ন এবং স্টলকে অ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, দ্বিতীয় বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং তৃৃতীয় প্রাণ আরএফএল গ্রুপের মিঠাই; স্টলসমূহের মধ্যে মিল্কভিক বাংলাদেশ লিমিটেড, গোল্ডেন ইনফিনিটি লিমিটেড ও শার্টবাজার যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়  হয়েছে। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০