নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে শেয়ার অফলোডে আরও এক বছর সময় পেলো রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার অফলোডের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী চার মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে আগামী এক বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা যায়, তার প্রতিবেদন তৈরি করবে।
শিল্প মন্ত্রণালয় তাদের পাঁচটি কোম্পানির শেয়ার অফলোডের বিষয়ে ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। মন্ত্রণালয়টির আওতাধীন কোম্পানি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের মতামতে জানিয়েছে, জাপানের মিৎসুবিশি মোটরস করপোরেশনের সঙ্গে পিআইএলের সম্পাদিত কম্পোনেন্টের সাপ্লাই এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী পিআইএলের শেয়ার ট্রান্সফার বা মালিকানা পরিবর্তন শর্ত প্রত্যাহার অথবা শিথিল করতে এমএমসি সম্মত নয়। এ অবস্থায় পিআইএলের ব্যবসায়িক অস্তিত্বের স্বার্থে আপাতত শেয়ার অফলোড না করার জন্য অনুরোধ করেছে ওই বিভাগের চিটাগং ড্রাইডক, কর্ণফুলী পেপার মিলস, বাংলাদেশ ইন্সুলেটর অ্যান্ড সেনিটারি ওয়্যার ফ্যাক্টরি ও ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে কোম্পানির শেয়ার অফলোডে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস লিমিটেড জানিয়েছে, তারা বর্তমানে বাজারে ৩০ শতাংশ কম দামে ওষুধ সরবরাহ করছে। ফলে এমন অবস্থায় পুঁজিবাজারে যাওয়ার বিষয়টি তাদের পর্ষদ সভায় আপাতত স্থগিত রয়েছে। বৈঠকে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে যাওয়ার বিষয়েও শিথিলতা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানিটিকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার অফলোডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর অর্থমন্ত্রী কোম্পানিটিকে সর্বশেষ ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার অফলোডের জন্য একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মতামত দেওয়ার সময় দেওয়া হয়। এর জবাবে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, পুঁজিবাজারে শেয়ার অফলোডের বিষয়ে পর্ষদ সভায় এ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করেছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তিনটি কোম্পানির মধ্যে শেরাটন হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে হোটেলটির রিনোভেশনের কাজ চলছেÑযা ২০১৭ সালের প্রথমার্ধে শেষ হবে। একইভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছে। যে কারণে এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে।
সরকারি ২৬ কোম্পানির তালিকায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের রয়েছে মোট ৯টি কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে বাখরাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি, লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস লিমিটেড (এলপিজিএল), জালালাবাদ গ্যাস টিঅ্যান্ডডি সিস্টেম লিমিটেড, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
বুধবারের বৈঠকের আগে পুঁজিবাজারে শেয়ার অফলোডের জন্য তালিকায় থাকা ২৬ প্রতিষ্ঠানের মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড জানিয়েছে, শেয়ার অফলোডের লক্ষ্যে বিটিসিএলের গত চার বছরের বেলেন্সশিট আইসিবি পর্যবেক্ষণ করছে। আইসিবির মতামত ইতিবাচক হলে শেয়ার অফলোডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। কোম্পানিটিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১০ সালের নভেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে শেয়ার অফলোডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর অর্থমন্ত্রী ডিসেম্বর ২০১০ ও সেপ্টেম্বর ২০১০ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। একই বিভাগের টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ২০১০ সালের নভেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে শেয়ার অফলোডের সময় দেওয়া হয়েছিল।