Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 12:42 pm

শে ক ড়  ক থ ন: চুঙ্গো মল্লিকের চুঙ্গোডাঙ্গা থেকে চুয়াডাঙ্গা

 

নামকরণের পেছনে রয়েছে লোকমুখে প্রচলিত নানা মিথ, রহস্য। এ পর্বে ‘চুয়াডাঙ্গা’ জেলার লোককথা গদ্যে সাজিয়েছেন শরিফুল ইসলাম পলাশ

চুয়াডাঙ্গা শহরটি মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ব্রিটিশ শাসনামলে চুয়াডাঙ্গা ভারতের নদীয়া জেলার একটি উপজেলা ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বর্তমান নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থানা বাদে বাকি অংশ কুষ্টিয়ার অধীনে আসে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম কমান্ড তথা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড এখানে গঠিত হয়েছিল। এর নেতৃত্বে ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ও ডা. আসহাব-উল-হক জোয়ার্দ্দার।

চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, এখানকার চুঙ্গো মল্লিকের নামে এ জায়গার নাম রাখা হয়েছে। ১৭৪০ সালের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তার পরিবার নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী ইটেবাডি-মহারাজপুর গ্রাম থেকে এখানে বসতি গড়েন। ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম ‘চুঙ্গোডাঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ আছে। চুঙ্গোডাঙ্গা শব্দটি ফার্সি থেকে উদ্ভূত। ফার্সি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের কারণে ‘চুয়াডাঙ্গা’ নামটি এসেছে।

ধারণা করা হয়, চুয়াডাঙ্গা এক সময় রাজা শশাঙ্কের রাজ্যভুক্ত ছিল। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করে বাংলায় সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। নদীয়ার তৎকালীন রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায় পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের সমর্থন করেছিলেন। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে চুয়াডাঙ্গাসহ কুষ্টিয়া অঞ্চল রাজশাহী জেলার অংশ ছিল। পরে ১৮২৮ সালে পাবনা জেলা গঠিত হলে অঞ্চলটি পাবনার অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৬০ সালে প্রশাসনিক সুবিধার কারণে নদীয়াকে পাঁচটি মহকুমায় বিভক্ত করা হয়।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুর মহকুমা, কুষ্টিয়া মহকুমা ও চুয়াডাঙ্গা মহকুমা নিয়ে জেলার মর্যাদা লাভ করে কুষ্টিয়া। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জেলায় উন্নীত হয় চুয়াডাঙ্গা।