নামকরণের পেছনে রয়েছে লোকমুখে প্রচলিত নানা মিথ, রহস্য। এ পর্বে ‘চাঁদপুর’ জেলার লোককথা গদ্যে সাজিয়েছেন শরিফুল ইসলাম পলাশ
এক হাজার ৭০৪ দশমিক ছয় বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বর্তমান চাঁদপুর জেলা। এ জেলার উত্তরে মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা। দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল। পূর্বে কুমিল্লা। পশ্চিমে মেঘনা নদী, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ। পদ্মা ও মেঘনা নদী দুটি চাঁদপুর শহরের কাছে এসে মিশেছে।
১৭৭৯ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ জরিপকারী মেজর জেমস রেনেল তৎকালীন বাংলার যে মানচিত্র এঁকেছিলেন, তাতে ‘চাঁদপুর’ একটি ‘অখ্যাত’ জনপদ ছিল। তখন চাঁদপুরের দক্ষিণে নরসিংহপুর নামক স্থানে চাঁদপুরের অফিস-আদালত ছিল। অবশ্য সেই নরসিংহপুর নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই।
বারো ভূঁইয়ার আমলে চাঁদপুর অঞ্চল ছিল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদ রায়ের দখলে। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জেএম সেনগুপ্তের মতে, চাঁদ রায়ের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে ‘চাঁদপুর’। এর ভিন্নমতও রয়েছে। অনেকে মনে করেন, চাঁদপুর শহরের পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নামানুসারে এ নাম রাখা হয়েছে। আবার কারো কারো মতে, পঞ্চদশ শতকে শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লি থেকে এসে এখানে একটি নদীবন্দর স্থাপন করেছিলেন। তিনিও পুরিন্দপুর এলাকায় বাস করতেন। তার নামানুসারে ‘চাঁদপুর’ রাখা হয়েছে।
ব্রিটিশ আমলে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের ফলে ১৮৭৮ সালে চাঁদপুরকে মহকুমা করা হয়। ১৮৯৬ সালের ১ অক্টোবর চাঁদপুর শহরকে পৌরসভার মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের নাম ছিল ত্রিপুরা জেলা। সদর উত্তর, সদর দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর এ চারটি মহকুমা নিয়ে ছিল ত্রিপুরা জেলা। এখানে ২১টি থানা ও ৩৬২টি ইউনিয়ন কাউন্সিল ছিল। চাঁদপুর মহকুমায় চাঁদপুর, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও মতলব নিয়ে পাঁচটি থানা ছিল।
১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘চাঁদপুর’।
Add Comment