নয়ন খন্দকার, ঝিনাইদহ: খরস্রোতা গড়াই নদীর ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ধলোহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘর, ফসলি জমি, গাছপালা ও রাস্তাঘাট। ভাঙনের মুখে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হাটবাজার।
গড়াই নদী ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে লাঙ্গলবাঁধ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রবাহিত। ১৯৯০ সালের পর থেকেই বছরের পর বছর গড়াই নদীর ভাঙনের করাল গ্রাসে বদলে গেছে সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলোহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়–রিয়া-কৃষ্ণনগর, মাদলা, কাশিনাথপুর, মাজদিয়া, উলুবাড়িয়াসহ লাঙ্গলবাঁধ বাজার এলাকা।
সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে গড়াই নদী। ইতোমধ্যে নদীতে হারিয়ে গেছে অনেক ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও বসতভিটা। নদীর করাল গ্রাসে যে কোনো সময় বিলীন হতে পারে ধলোহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মাঝদিয়া, উলুবাড়িয়া, কাশিনাথপুরসহ লাঙ্গলবাঁধ বাজারের বেশকিছু অংশ। জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে হুমকিতে পড়বে লাঙ্গলবাঁধ, আদিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা কলোনিসহ বৃহৎ এ বাজারের একটি অংশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাঙ্গলবাঁধ আদিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের পেছনে এবং বৃহৎ বাজার প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন ধরেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল ধরে নদীতে হারিয়ে গেছে ইউনিয়নটির কয়েকটি গ্রামের রাস্তাঘাট এবং ধান, আখ, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের জমিও। ইতোমধ্যে বেশকিছু বাড়িঘর ও বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ায় মানুষ বিকল্প রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করছে বসতভিটার ভেতর ও বাইরের অংশ। নদীতে প্রবল স্রোত ও ভারী বর্ষণে ভাঙন ক্রমেই আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও শৈলকুপা শাখা কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, এলাকাটি নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। জরুরি বরাদ্দ চেয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহ পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত গড়াই নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়, তাই সে ব্যাপারেও সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে লাঙ্গলবাঁধ বাজার এলাকার বেশকিছু জায়গা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রকল্প বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 8:15 am
শৈলকুপায় গড়াইয়ের ভাঙনে ঘরবাড়ি ফসলি জমি বিলীন
সারা বাংলা ♦ প্রকাশ: