Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 9:33 pm

শোকজ করা পাঁচ কোম্পানি সন্তোষজনক জবাব দেয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বছরের পর বছর উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি টানা পাঁচ বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া ‘জেড’ ক্যাটেগরির পাঁচ কোম্পানি ডিএসইর শোকজের জবাব দিয়েছে। তবে এটা সন্তোষজনক মনে হয়নি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষের। যে কারণে তারা প্রতিষ্ঠানগুলো সরেজমিনে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনে যাবে ডিএসই। সম্প্রতি ডিএসই’র এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছেÑমেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, শাহিনপুকুর সিরামিক, সমতা লেদার এবং সোনারগাঁও টেক্সটাইল লিমিটেড।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন শেয়ার বিজকে বলেন, কিছুদিন আগে যে সব কোম্পানিকে শোকজ করা হয়েছে তার মধ্যে থেকে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান জবাব পাঠিয়েছে। কিন্তু এটা আমাদের মনোপূত হয়নি। যে কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সরেজমিনে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে ১০টি কোম্পানি এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি, তারা সময় চেয়েছে, তাদের জন্য একটি নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে না পারেÑএ লক্ষ্যে সম্প্রতি ১৫ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জানার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। এ জন্য কোম্পানিগুলোকে শোকজের নোটিস পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছেÑমেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, জুট স্পিনার্স, ইমাম বাটন, বেক্সিমকো সিনথেটিক্স, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, দুলামিয়া কটন, শাইনপুকুর সিরামিক, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, শ্যামপুর সুগার মিলস, জিল বাংলা সুগার মিলস, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, কেঅ্যান্ডকিউ (বাংলাদেশ), সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও ইনফরমেশন নেটওয়ার্কস লিমিটেডকে টানা পাঁচ বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে কোম্পানির বর্তমান পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, লভ্যাংশ ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। সূত্র জানা গেছে, ডিএসইর নজরদারিতে রয়েছে এ ধরনের ৩০ কোম্পানি। সবগুলো কোম্পানিকেই পর্যায়ক্রমে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারলে প্রতিষ্ঠানগুলো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রমতে, এর সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে তালিকাচ্যুতি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, এসব কোম্পানি তালিকাচ্যুত করা হলে বিনিয়োগকারী হয়তো স্বল্প মেয়াদে ক্ষতি হবে। তবে বাজারের বৃহৎ স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত। কারণ কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হওয়ার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি।
অন্যদিকে ডিএসইর এ ধরনের সিদ্ধান্তকে ভালো উদ্যোগ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত এমন সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে। পাশাপাশি পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হবে।
এর আগে গত ১৮ জুলাই দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিংকে (ডিলিস্টিং) করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। নিকট ভবিষ্যতে কোম্পানি দুটির উৎপাদন শুরু করার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ডিএসইর তালিকাচ্যুত (ডিলিস্টিং) ২০১৫ এর ৫১/১ এর আইন অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদনহীন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা খারাপ কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।