শোক দিবসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন; শ্রদ্ধা নিবেদনে ঢল নেমেছিল সর্বস্তরের মানুষের।

জাতীয় শোক দিবসের আগের দিন ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছিলেন, নির্বাচনের বছরে জাতীয় শোক দিবস পালনে লোক সমাগমকে ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই লোক সমাগম শুরু হয় গতকাল মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই। কালো পোশাক পরে বা পোশাকে কালো ব্যাচ ধারণ করে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে মানুষের ঢল নামে।

এক পর্যায়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, রাসেল স্কয়ার, কলাবাগান, পান্থপথ এলাকায় হাজারো মানুষকে অপেক্ষায় দেখা যায়। নিউমার্কেট এলাকা দিয়ে যারা মিছিল নিয়ে আসেন, তাদের কলাবাগান থেকেই ব্যানার নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয়।

অন্যদিকে পান্থপথ দিয়ে আসা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্কয়ার হাসপাতাল এলাকায় ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। জনস্রোত বেশি হওয়ার কারণে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।

গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকার প্রায় সব এলাকায় মাইকে মাইকে বাজছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। সঙ্গে সেই গান‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত, বঙ্গবন্ধু মরে নাই।’

সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি।

সকাল সাড়ে ৬টায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায়

প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হেসেন আমুর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানান জোট নেতারা। শ্রদ্ধা জানান ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারাও।

পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, আইনজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটসহ নানা অঙ্গ সংগঠন। এরপর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়ক সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকরের দাবি তোলেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদেরও চিহ্নিত করার দাবি জানান তারা।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও দিনের নানা কর্মসূচিতে অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ।

দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। এদিন জাতীয় ও আওয়ামী লীগের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়, উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা। বাদ জোহর মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া এবং মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য প্রার্থনা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এতিম ও দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ ও গণভোজেরও আয়োজন করা হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০