শ্রমিকবান্ধব উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ

গতকালের শেয়ার বিজে শ্রমিকদের জন্য একটি ভালো খবর প্রকাশিত হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক জানিয়েছেন, শ্রমিকদের জন্য টঙ্গীতে বার্ন ইউনিটসহ দুইশ শয্যার হাসপাতাল নির্মিত হবে। হাসপাতালটি চালু হবে আগামী তিন বছরের মধ্যে। তিনি আরও জানান, জমি প্রাপ্তিসাপেক্ষে টঙ্গীতেই নারী শ্রমিকদের আবাসনের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের পাশাপাশি তাদের সন্তান যদি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে, তাহলে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা দেওয়া হবে। আমাদের শ্রমিকরা যে পরিশ্রম করেন, তুলনায় তাদের প্রাপ্তি কমই। প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণাগুলো বাস্তবায়িত হলে তা শ্রমিকদের জন্য সরাসরি উপকার বয়ে আনবে। আমরা এসব উদ্যোগ গ্রহণে প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।

বিশ্বে যেসব দেশে সবচেয়ে সস্তা শ্রম পাওয়া যায়, তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। মূলত এ কারণে এদেশে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প দ্রুত বাড়ছে। গার্মেন্টের মতো এতটা বড় পর্যায়ে না যেতে পারলেও অন্য অনেক ব্যবসা বা শিল্প রয়েছে, যেখানে প্রচুর শ্রমিক কাজ করছেন। শুধু বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে নয়, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও শ্রমিকরা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। গত কয়েক বছরে গার্মেন্টে আগুন ও ভবন ধসে অনেক শ্রমিক মারা গেছেন, আহত হয়েছেন তার কয়েক গুণ। এতে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। শ্রমিকদের কাছ থেকে যে পরিমাণ শ্রম আদায় করা হয়, বিনিময়ে তারা পান কমই। এদেশে অদক্ষ শ্রমিকের বিপুল উপস্থিতি থাকলেও দক্ষ শ্রমিক বাড়ছে না। শ্রমশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব নীতি রয়েছে, তার অনেকগুলো শ্রমবান্ধব নয়। বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি কৃষক হলেও শ্রমিকরা কিন্তু পিছিয়ে নেই। সে তুলনায় আমরা তাদের প্রতি প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিচ্ছি কি?

শ্রম প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণাগুলো আমরা ইতিবাচক অর্থে দেখছি; কারণ এভাবে আস্তে আস্তে শ্রমিকদের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের সুবিধা বাড়াতে হবে। শুধু টঙ্গী নয়, যেসব স্থানে শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে বা উঠছে, সেসব স্থানে শ্রমিকদের জন্য বাসস্থানের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। আলাদা হাসপাতাল গড়ে তোলা অবশ্য ব্যয় ও সময়সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলোয় শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সরকারি হাসপাতালে তারা যেন সহজে ও কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে যে উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে, সেটি দীর্ঘ মেয়াদে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। আমরা চাই, শ্রম মন্ত্রণালয় সারা দেশের বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকের কথা চিন্তা করে মৌলিক চাহিদা পূরণের বিষয়গুলোয় আগে মনোযোগ দেবে। শ্রম আইনকেও শ্রমিকবান্ধব করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। শ্রম ও শ্রমিকবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করলে দেশ সরাসরি উপকৃত হবে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০