Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:24 pm

‘শ্রমিক আন্দোলনকে পুঁজি করে নাশকতা করলেই ব্যবস্থা’

প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা) : শ্রমিক আন্দোলনকে পুঁজি করে কোনো ধরনের নাশকতা-সহিংসতা করে পোশাকশিল্প যদি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, একইভাবে যারা এই গার্মেন্ট শিল্পকে নিয়ে অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি করছে, তাদের আমরা অনেককে আইডেন্টিফাই করতে পেরেছি। তাদের বেশ কয়েকজনকে এরই মধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ভবিষ্যতে যারা এই শিল্প নিয়ে পেছন থেকে হোক বা মাঠ থেকে হোক অরাজকতা করার চেষ্টা করবে, তাদের আইনের আওতায় আনব। এরই মধ্যে যেখানে যেখানে গার্মেন্ট বেশি রয়েছে, সে স্থানগুলোয় আমাদের র‌্যাবের টহল বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে আমরা যৌথ পেট্রোল করছি। যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা রোধে আমাদের এই পেট্রোল কার্যক্রম চলমান থাকবে।

গতকাল শনিবার র‌্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কার্যালয়ে পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা রোধে পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শন করে র‌্যাবের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আশির দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে পোশাকশিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এখন বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের অধিকাংশ উপার্জন এই পোশাকশিল্প থেকে আসছে। এই পোশাকশিল্পকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য একটি স্বার্থন্বেষী মহল বা দুষ্কৃতকারীরা উঠে-পড়ে লেগেছে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে আমাদের দেশের শান্তিপ্রিয় পোশাক শ্রমিকরা তাদের বেতন বৃদ্ধির যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। বিষয়টি সরকারের দপ্তর, বেসরকারি সংস্থা, মালিকদের সংগঠনÑসবাই আমলে নিয়ে একটি মজুরি কমিটি গঠন করে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

মিডিয়া উইংয়ের এই পরিচালক বলেন, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের শান্তিপ্রিয় শ্রমিকদের ভুল তথ্য ও গুজবের মাধ্যমে বা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য উসকানিমূলক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে অরাজকতা, সহিংসতা বা নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গত ৩১ অক্টোবর জোসনা নামে এক পোশাক শ্রমিককে মিরপুর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে কেউ না কেউ গুম করেছে এমন একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ১ নভেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিরপুরে অনেক সহিংসতা ও নাশকতা হয় এই গুজবের কারণে। ?র‌্যাব-৪-এর একটি আভিধানিক দল ১ নভেম্বর জোসনাকে খুঁজে বের করে, যেই জোসনা কি না বাসায় তার পরিবার নিয়ে অবস্থান করছিলেন।

কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থার হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যারা এই শান্তিপ্রিয় শ্রমিক ভাইদের নিয়ে নাশকতা ও সহিংসতার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গাজীপুর সার্ভার আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় দুষ্কৃতকারীরা চোরাগোপ্তা হামলা ও সহিংসতা করছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। র‌্যাব ফোর্সেস এই চলমান সহিংসতা প্রতিরোধে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছি। আগের তুলনায় আমরা আমাদের সাইবার ওয়ার্ল্ডে নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ যদি আমাদের এই শান্তিপ্রিয় গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিয়ে উসকানিমূলক কোনো রকমের বক্তব্যের মাধ্যমে শ্রমিকদের উসকে দেয়, আমরা তাদের আইনের আওতায় আনব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন র?্যাব ফোর্সেসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স), অপারেশন্স উইংয়ের পরিচালক ও র‌্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।