শ্রমিক রফতানি বাড়ুক অর্থবহ হোক

 

দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। এ অবস্থায় গতকাল শেয়ার বিজে ‘চলতি বছর আট লাখ কর্মী বিদেশ পাঠানো হবে: প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এতে বলা হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখতে এ বিপুলসংখ্যক কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০১৬ সালে বিভিন্ন দেশে সাত লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বিশ্বের ১৬২ দেশে প্রায় এক কোটি পাঁচ লাখ কর্মী কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের পাশাপাশি যেসব দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন, তাদের সেবায় শ্রম উইং খুলছে সরকার। ইতোমধ্যে ২৯টি দেশে এ উইং খোলা হয়েছে। বাকি দেশগুলোতে দ্রুত এটা খোলা দরকার। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে বেশি শ্রমিক পাঠানো হয়। এ সময় সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী গেছেন ওমানে, এরপরই রয়েছে সৌদি আরব। অনেক দেশে আমাদের শ্রমিকরা ভালো নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। গমনেচ্ছুদের বিষয়টিও কর্তৃপক্ষকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে যেসব শ্রমিক পাঠানো হয়, এদের অধিকাংশই অদক্ষ বা আধাদক্ষ। দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারলে বেশি রেমিট্যান্স আয় করা সম্ভব। এজন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে বেশ কিছু জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা আরও বেশি করা যেতে পারে। বিদেশে গমনেচ্ছুদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার ঝামেলা এড়াতে ঢাকা-চট্টগ্রামের পাশাপাশি কক্সবাজার, কুমিল্লা, রাজশাহী ও রংপুরে বিএমটি অফিস চালু করেছে, এটাও ভালো উদ্যোগ। সব জেলায় এটা চালু করা গেলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সুবিধা হবে। বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়েও তাদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অন্যান্য জেলা অফিস থেকেও এটা করতে পারলে শ্রমিকদের সুবিধা হতো।

অনেক দেশে বাংলাদেশি নারীশ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। যেসব দেশে নারীশ্রমিক পাঠানো হয়েছে, তার ইতিবাচক ফল আমরা পাইনি। ওইসব দেশে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুুখীন হন। কীভাবে নারীদের আরও উন্নত দেশে ভালো পরিবেশে পাঠানো যায়, সেদিকে সংশ্লিষ্টরা নজর দেবেন আশা রাখি। শ্রমিকরা ওইসব দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন, সুতরাং তাদের শ্রমমূল্য আদায়ে কোনো ছাড় নয়। ইদানীং বিদেশে শ্রমিকের মৃত্যু বেশি ঘটছে, এটাও খতিয়ে দেখা দরকার। শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবার মান কীভাবে বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। শ্রমিকরা যে অর্থ নিয়ে আসছেন, তা কীভাবে উন্নয়নকাজে লাগানো যায়, তারও দিকনির্দেশনা চাই। রেমিট্যান্স উৎপাদনশীল কাজে লাগিয়ে উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্টরা ভূমিকা রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০