প্রতিনিধি, শ্রীপুর (গাজীপুর) : গাজীপুরের শ্রীপুরে ছাত্রলীগ কর্মী সৈয়দ মাহবুব হোসেন মাসুম আহমেদ (মাসুমকে) খুনের মূল পরিকল্পনাকারী শ্রীপুর পৌর বিএনপি নেতা শেখ মারুফ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার (১৮ জুলাই) শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃত শেখ মারুফ আহমেদ (৬২) শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকার মৃত শিহাব উদ্দিন আহমেদের ছেলে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত বছরের ঈদুল আজহার দিবাগত ভোর রাত (২০২১ সালের ২২ জুলাই) সাড়ে ৩টার দিকে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে সৈয়দ মাহবুব হোসেন মাসুম আহমেদ (২৭)। এ ঘটনায় নিহতের চাচা মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর জেলার কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তকালে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাসুম খুনের ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে আবুল কালাম ও হারুন অর রশিদসহ ৩ জন আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিকালে তারা এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে শেখ মারুফের নাম প্রকাশ করে। এর ভিত্তিতে মারুফকে গ্রেফতার করা হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মাসুমের ঘর থেকে জমির কাগজপত্র চুরি করতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই’র) ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান ও নিহতের স্বজনরা জানান, ২০২১ সালের ঈদুল আজহার দিন পশুর চামড়া বিক্রি করে ২২ জুলাই ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসায় ফিরেন ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ মাহবুব হোসেন মাসুম আহমেদ। ঘরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ব থেকে ঘরের ভিতর ওঁৎ পেতে থাকা কয়েক দুর্বৃত্ত তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় ও মারধর করে। ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা বাড়ির অন্যান্য ঘরের দরজা বাইরে থেকে সিটকিনি আটকিয়ে রাখে। আহত মাসুমের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় আল-হেরা হাসপাতাল পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তিনি মারা যান। মাসুম ওই বছর ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে উত্তীর্ণ হন। তিনি শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।