প্রতিনিধি, শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা চালক কিশোর হাবিবুর রহমান দুঃখু মিয়াকে (১৪) জবাই করে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নিহত দুঃখু মিয়ার বাবা জাবেদ মিয়া গতকাল সোমবার সকালে শ্রীপুর থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরহাওলা গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে মৃদুল ইসলাম (২১) ও ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বোরোরচর এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে আমীরুল (২৫)। হাবিবুর রহমান দুঃখু মিয়া সিলেটের সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার গাছগড়া গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে। তিনি উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদের বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালিয়ে বাবাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন। গত রোববার রাত সোয়া ১০টায় উপজেলার নগরহাওলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ পর নগর হাওলা এলাকার জৈনা বাজার-ধনুয়া রাস্তার ওপর ওই কিশোরের জবাই করা মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। দুর্বৃত্তরা দুঃখু মিয়াকে জবাই করে হত্যার পর মরদেহ রাস্তার মাঝখানে ফেলে তার অটোরিকশা নিয়ে যায়।
হত্যার শিকার দুঃখু মিয়ার বড় ভাই সজীব মিয়া জানান, সে আগে ঝালমুড়ি বিক্রি করেছে। কয়েক দিন ধরে ভাড়া নিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করত।
পরিদর্শক জানান, নিহত কিশোরের মরদেহের কাছে একটি মোবাইল ও ছোরা পাওয়া যায়। ওই মোবাইল ফোনের নম্বরের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত মৃদুল স্থানীয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে থেকে ধনুয়া যাওয়ার উদ্দেশে কিশোর দুঃখু মিয়ার অটোরিকশায় ওঠে এবং নগর হাওলা এলাকার সোহাগ হাজির বাড়ির পুকুরের দক্ষিণ পাশে জৈনাবাজার-ধনুয়া কাঁচা রাস্তার ওপর কিশোর দুঃখু মিয়াকে ছুরিকাঘাত ও জবাই করে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সড়কের মাঝখানে ঘটনাস্থলে দুঃখু মিয়ার মরদেহ পড়েছিল।
অপর অভিযুক্ত আমিরুল হত্যাকারী মৃদুলকে ৫০ হাজার টাকায় একটি অটোরিকশা ছিনতাই করে এনে দিতে বলে। এর জন্য তাকে ঘটনার আগে সে একটি ছোরা সরবরাহ করে। ওই ছোরাটিও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ছিনতাই করা অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেছে।