প্রতিনিধি, শ্রীপুর (গাজীপুর): কলকারখানার দূষিত বর্জ্যে শ্রীপুরের প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোর মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। সুতিয়া নদী অনেকটা নিরাপদ ছিল। এ নদীতেও অতি সম্প্রতি কারখানার দূষণ দেখা দিয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এসব তথ্য উপস্থাপন করেন শ্রীপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল্লাহ। গতকাল রোববার শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, এলাকার মানুষের কাছ থেকে দূষণের খবর পেয়ে সুতিয়া নদীবেষ্টিত এলাকায় অনুসন্ধান করে দূষণের সত্যতা পান তিনি। পানির পাইপ ও মাটির নিচে ড্রেন ব্যবহার করে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা ও সিডস্টোর এলাকার কলকারখানার বর্জ্য উপজেলার ত্রিমোহনী দিয়ে সুতিয়া নদীতে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নয়ন মিয়া জানান, কারখানাগুলোর ইটিপি ব্যবহার নিশ্চিতের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। যে কারখানাগুলো ইটিপি ব্যবহার করে না, সেগুলো চিহ্নিত করে মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হচ্ছে।
মাওনা চৌরাস্তার বাসিন্দা সংবাদকর্মী জামাল উদ্দিন বলেন, অনিবন্ধিত ক্লিনিকগুলো মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক নির্দেশে বন্ধ থাকার পরও আবার চালু হওয়া এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
ওই সংবাদকর্মীর প্রশ্নের উত্তরে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, মাওনা চৌরাস্তায় সড়কের পাশে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ২৫ থেকে ৩০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক রয়েছে। কিছু ক্লিনিকের অবস্থান বহুতল ভবনের তৃতীয় তলায়ও দেখা গেছে। অনিবন্ধিত ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে কেউ কার্যক্রম চালানোর সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা নিবন্ধন নবায়ন করেনি, তাদের তিন মাস সময় দেয়া হয়েছে।
শ্রীপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক আকন্দ যানজট ও দুর্ঘটনা নিরসনে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকসহ অনিবন্ধিত যানবাহন নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন। এজন্য শ্রীপুরসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোয় ট্রাফিক খুঁঁটির সাহায্যে সড়কগুলোয় আলাদা লেন নির্ধারণের দাবি জানানো হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, অতি সম্প্রতি পরিসংখ্যান জরিপের তথ্যমতে, শ্রীপুর উপজেলায় আট লাখের বেশি মানুষ বসবাস করছে। সে তুলনায় শ্রীপুর থানায় ১৫০ পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ট্রাফিক খুঁঁটির সাহায্যে সড়কগুলোয় আলাদা লেন করে দেয়া হবে। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সবাইকে ভূমিকা পালনের জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল কুমার হালদারের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধান। বক্তব্য দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান প্রমুখ।