রিয়াজুল হক: বছর দুয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলাম, ভেনেজুয়েলার মুদ্রাস্ফীতি, ডাচ ডিজিজ আর সেইসঙ্গে আমাদের দেশের রপ্তানি আয়ের মূল খাত, অর্থাৎ আরএমজির তুলনা করা হয়েছে। অনেকেই মতামত শেয়ার দিলেন। কিন্তু বিষয়টি যেভাবে তুলনা করে দেখানো হয়েছে, সেটা যদি ওইভাবে বাস্তবায়িত হতো, তবে আমাদের আরএমজি খাত অনেক আগেই ধসে যেত। কিন্তু সেটা হয়নি, বরং আমাদের আরএমজি খাতে আয় বেড়েছে। এর পেছনেও অনেক কারণ রয়েছে। কেন ডাচ ডিজিজ, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আমাদের আরএমজি খাত তুলনা অযৌক্তিক, শুরুতেই সেটার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করব। এরপর আসব বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যে আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির তুলনা করা হচ্ছে, সেটা কেন অযৌক্তিক।
এক. ভেনেজুয়েলা: এটি বিশ্বের বৃহত্তম তেল মজুতকারী দেশ এবং উৎপাদিত তেলের প্রায় সবটাই রপ্তানি করত। দেশটির সমস্যার শুরু যেন বিশ্ববাজারে তেলের দরপতন দিয়েই। বিশ্ববাজারে তেলের দরপতন শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। অথচ ২০০৪ থেকে ২০১৩, এই সময়ের মধ্যে ভেনেজুয়েলা ছিল বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ করা দেশগুলোর একটি, যখন তেলের মূল্য বিশ্ববাজারে অনেক বেশি ছিল এবং বেশি থাকাটাই যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বর্তমানে সব তেলভিত্তিক অর্থনীতির দেশই ভুগছে, কিন্তু ভেনেজুয়েলার অবস্থা আকাশ থেকে টেনে মাটিতে ফেলে দেয়ার মতো। বর্তমানে দেশটি যেসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি, হ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বাজেট ঘাটতি।
তেলের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতাকে কিছুটা দায়ী করা গেলেও বড় দোষটা গিয়ে পড়ে দেশের নেতাদের কাঁধে। তাদের অসামর্থ্যইে মূলত ভুগছে ভেনেজুয়েলা। দেশটির অতিরিক্ত ব্যয় সমস্যা বহু পুরোনো। ব্যয়ের বেশিরভাগই হচ্ছিল গোপনে, কিন্তু এর অধিকাংশই আবার প্রকাশ্যে চলে যাচ্ছিল ভোগস্ফীতি তৈরিতে, যার আসল উদ্দেশ্য ছিল সরকারি দল পিএসইউভির নির্বাচনে জেতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ২০১৩ সালে চাভেজ যুগের সমাপ্তি নাগাদ ভেনেজুয়েলার অর্থঘাটতি আনুমানিক জিডিপির ১৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। ওই সময়ে অন্য কোনো ওপেক দেশেই এমনটি ঘটেনি। অধিকাংশই তেলের মূল্য বৃদ্ধির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত আয় রিজার্ভ হিসেবে রেখে দিয়েছিল। কিন্তু ভেনেজুয়েলা ব্যয় কমিয়ে রিজার্ভের দিকে কোনো নজর দেয়নি। তেলের মূল্য কমতে শুরু করার আগে ব্যয় কমানো কী জিনিস, ভেনেজুয়েলা যেন ভুলেই গিয়েছিল।
এই শতকের মধ্যভাগ থেকে তেল রিজার্ভ বেড়েছে, অথচ উৎপাদন হ্রাস ও বর্ধিত ঋণের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে, এমন গোটাকয়েক রাষ্ট্রের মাধ্যে ভেনেজুয়েলা একটি। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, প্রশিক্ষিত কর্মীদের বদলে ‘বিপ্লবীদের’ এই খাতে নিয়োগ দেয়া, যারা প্রেসিডেন্টের যেকোনো ইচ্ছা বাস্তবায়নে ব্যাকুল। ফলে এখন পর্যন্ত সেখানে রয়ে গেছে উৎপাদনশীলতার সমস্যা। সাধারণত দেখা যায়, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়। সেই হারও ধীরগতির হবে, সেটাই স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠান লাভজনক না হলে সেখানে নতুন নিয়োগের সম্ভাবনা থাকে না। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কলম্বিয়ার তেল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৯২ শতাংশ, কিন্তু চাকরির হার বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। একই সময়ে ভেনেজুয়েলায় তেল উৎপাদন কমে যাওয়া সত্ত্বেও চাকরি বেড়েছে ২৫৬ শতাংশ। এছাড়া অধিক হারে রাষ্ট্রীয়করণ দেশের মুদ্রাস্ফীতির জন্যও দায়ী। প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহ, দারিদ্র্য দূর এবং অসমতাকে ব্যালেন্স দেয়ার জন্য কিছু রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সবকিছু রাষ্ট্রীয়করণ করতে হবে, এটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। অথচ ভেনেজুয়েলায় সেটাই ঘটেছে।
দুই. ডাচ ডিজিজ: এবার ডাচ ডিজিজের বিষয়ে আসা যাক। গত শতাব্দীতে ডাচরা প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার পর অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসা শুরু করল। গ্যাস রপ্তানি শুরু হলো। গ্যাস রপ্তানি মোট রপ্তানির ৮০ ভাগ হয়ে গেল। এ সময় নেদারল্যান্ডস তার মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে পারেনি।
ডাচ মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে বেড়ে গেল। এতে করে মূল যে সমস্যা তৈরি হলো, ডলারের বিপরীতে ডাচ মুদ্রার মান বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে রপ্তানির সময় কম মূল্যমান পাচ্ছিল। অর্থাৎ মোট রপ্তানি আয় কমে গিয়েছিল। এটাই মূলত ডাচ ডিজিজ। এখান থেকেই পরে ডাচ ডিজিজ কনসেপ্টটি আসে। ডাচ ডিজিজ মূলত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অতি নির্ভরতা এবং ভবিষ্যতে এই সম্পদের হ্রাস পেলে যে আর্থিক মন্দার সৃষ্টি হবে, সেটাকে বুঝিয়ে থাকে।
তিন. ভেনেজুয়েলা কিংবা ডাচ ডিজিজের সঙ্গে তুলনা কেন অযৌক্তিক: ভেনেজুয়েলা কিংবা ডাচ ডিজিজের সঙ্গে আমাদের দেশের তুলনা করা অযৌক্তিক। এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে
ক. আমাদের আরএমজি সেক্টর মূলত লেবার ইনটেনসিভ খাত। কিন্তু ভেনেজুয়েলা কিংবা নেদারল্যান্ডস পুরোপুরি প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর; খ. ডাচরা যখন গ্যাস রপ্তানি শুরু করল, তখন তাদের মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে বেড়ে গিয়েছিল। সেটা কিন্তু আমাদের এখানে হয়নি। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। আমাদের রপ্তানি আয় কমার কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। এটা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখে; গ. ভেনেজুয়েলার সরকার তাদের স্বার্থে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করেছে, সবকিছুই ছিল রাষ্ট্রীয়করণের আওতায়। কিন্তু আমাদের আরএমজি সেক্টর প্রাইভেট সেক্টরের আওতায়। অর্থাৎ কোনো দিক থেকেই ডাচ ডিজিজ কিংবা ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আমাদের আরএমজির তুলনা করা যায় না।
চার. শ্রীলঙ্কা: ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে অফিশিয়াল কাজের জন্য শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে হোটেল বুকিং করা হয়েছিল। এক দিনের ভাড়া ছিল খুব সম্ভবত ছয় হাজার ৫০০ রুপি (শ্রীলঙ্কার মুদ্রা)। যা-ই হোক, কলম্বো বিমানবন্দর থেকে নেমে হোটেলের পথ ধরলাম। হোটেলে পৌঁছে কিছুটা অবাক হলাম। কারণ এক দিনের জন্য ছয় হাজার ৫০০ রুপি ভাড়া দিয়ে যে মানের হোটেল আশা করেছিলাম, সেটা আদৌ সেই মানের হোটেল ছিল না। মাঝারি মানের হোটেল। আমাদের দেশে হলে এক হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া হতো।
রাত তখন ১টা বাজে। হোটেলের নিজস্ব যে রেস্টুরেন্ট, সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাধ্য হয়ে খাবারের জন্য বাইরে রেস্টুরেন্ট খুঁজতে গেলাম। কাছাকাছি পেয়েও গেলাম। খুবই সাধারণ মানের। রাতে খাওয়ার জন্য আর কোথায় যাব, এই চিন্তা করে সেখানেই ঢুকলাম। খাবার খেতে গিয়ে তো অন্যরকম অনুভূতি, দুটা পরোটার দাম ১২০ রুপি (যা আমাদের দেশে ২০ টাকা হবে), দুটা ভাজা ডিমের দাম ২৪০ রুপি। ভাবলাম, খরচ যেহেতু বেশি, তাদের আয় কেমন। জানতে পারলাম শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার বেতন (আমাদের দেশের নবম গ্রেড) বেতন প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার রুপি। অর্থাৎ তাদের আয়ও অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কার আয়-ব্যয়ের আধিক্য অনেক আগে থেকেই। ২০১৮ সাল নাগাদ আমাদের এক টাকায় শ্রীলঙ্কার দুই রুপির মতো পাওয়া যেত। বর্তমান পরিস্থিতিতে এক টাকায় ৩.৬০ রুপি। অর্থাৎ রুপির মান কমেছে। যা-ই হোক, শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট চরম অবস্থায় পৌঁছে গেছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় যে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে, তার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছেÑ
এক. কৃষিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশের কৃষি বিশেষজ্ঞদের কোনো মতামত ছাড়াই অরগানিক ফার্মিং চালু করা। কিন্তু কৃষক জৈব কম্পোস্ট সারও পায়নি। অপরিকল্পনার দরুন দেশটিতে ফলন বিপর্যয় হলো এবং উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশে পর্যন্ত নেমে গেল। চালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম হু-হু করে বেড়ে যায়। চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলঙ্কা ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়। এবং কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ২০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করে; দুই. পর্যটন খাত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের গুরুত্বপূর্ণ খাত। শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার বড় জোগান আসে দেশটির পর্যটন খাত থেকে। কিন্তু করোনার কারণে সেই খাত এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে। চীন থেকে সবচেয়ে বেশি পর্যটক দেশটিতে আসত। কিন্তু চীনে করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ কঠোর থাকায় চীন থেকে পর্যটক আসতে পারেনি। এই খাতে উত্তরণ এখনও অনেক সময়ের ব্যাপার; তিন. শ্রীলঙ্কার অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেও অভূতপূর্ব ধস নেমেছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ কমে গেছে। চার. অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকার ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভ্যাট ও ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ভ্যাট প্রদানের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আট শতাংশে আনা হয়। কিন্তু এর কয়েক মাসের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে কভিড মহামারি শুরু হয়। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যায় এবং সরকার আরও ঋণ নিতে বাধ্য হয়; পাঁচ. গত ১২ থেকে ১৫ বছরে শ্রীলঙ্কা বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে হাম্বানটোটায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, জঙ্গলের মধ্যে বিমানবন্দর নির্মাণ, চাইনিজ সিটি নির্মাণসহ আরও নানা ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে চড়া সুদে দেশটি ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেগুলো অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়নি, যে কারণে অলাভজনক প্রকল্পের পাশাপাশি চড়া সুদে আনা ঋণ সুদাসলে পরিশোধ করতে হচ্ছে; ছয়. আন্তর্জাতিক বন্ড বাবদ শ্রীলঙ্কার ঋণ রয়েছে এখন সাড়ে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া দেশীয় উৎস থেকেও সরকার ঋণ করেছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর শ্রীলঙ্কাকে প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বর্তমানে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ দশমিক ৫ থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছে।
পাঁচ. শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা কেন অযৌক্তিক: শ্রীলঙ্কা যেসব কারণে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে আমাদের বর্তমান অবস্থানের তুলনা করা যেতে পারে।
আমরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অরগানিক ফার্মিং চালু করিনি। এছাড়া আমাদের খাদ্য উৎপাদন প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে। আমাদের দেশের পর্যটন খাত এখনও শ্রীলঙ্কার মতো বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের ক্ষেত্রে সেরকম বড় বাজার নয়। যেজন্য মহামারি করোনার কারণে আমাদের বৈদেশিক আয়ে প্রভাব পড়েনি। বরং আমাদের আয়ের মূল খাত আরএমজি সেক্টরের আয় আরও বেড়েছে। বাংলাদেশের অভিবাসী রেমিট্যান্সেও ধস নামেনি। শ্রীলঙ্কার মতো ভ্যাট কমানো হয়নি।
এরপর গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়, সেটা হচ্ছে আমাদের মেগা প্রজেক্ট-বিষয়ক। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মতো প্রজেক্ট বিশ্বদরবারে আমাদের ইমেজকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। মেট্রোরেল কিংবা কর্ণফুলী টানেল, সেটাও সময়ের দাবি ছিল। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের পরিবর্তে এটিকে একটি সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ হিসেবে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। অনেকেই আমাদের ঋণ বৃদ্ধির কথা বলছেন, কিন্তু আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা রিজার্ভ বৃদ্ধির কথা কেউ বলছেন না।
একটি দৈনিকে প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম বেশ কিছু প্রজেক্টের বিষয়ে কিছু মতামত তুলে ধরেছেন। যেমন ১. ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন; ২. দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প; ৩. পূর্বাচলে ১১০ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স; ৪. শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর; ৫. পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু; ৬. নোয়াখালী বিমানবন্দর এবং ৭. ঢাকার বাইরে রাজধানী স্থানান্তর। যদি দরকার হয়, এসব মেগা প্রজেক্টের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আবার যাচাই করা যেতে পারে। প্রয়োজনীয় ও লাভজনক হলে অবশ্যই আমরা আমাদের বড় বড় প্রকল্প সামনের দিকে এগিয়ে নেব। তবে শ্রীলঙ্কা যেসব কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে, অবশ্যই আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেছেন। তাই শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট যেসব কারণে হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নিলে, সেই দেশের সঙ্গে আমাদের তুলনা যৌক্তিক হতে পারে না।
যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক